Tethys Ocean: কিছু কিছু আবিষ্কার মানুষকে হতবাক করে দেয়, প্রজন্মকে করে দেয় বাকরুদ্ধ। তেমনভাবেই মরু দেশের সমুদ্রের হদিশ পেয়ে হতবাক হয়ে গিয়েছেন অনেকেই। আসলে জয়সলমিরের মোহনগড়ে কুয়ো খুঁড়তে গিয়েই ঘটে গিয়েছে তাজ্জব করার মত এই ঘটনা। কুয়ো খুঁড়তে খুঁড়তে হঠাৎ করেই জলের ফোয়ারা বেরিয়ে আসে। টানা তিনদিন ধরে চলে সেই জলের ফোয়ারা। এরকম একটি ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে উৎসাহ এবং উত্তেজনা তুঙ্গে উঠে যায় মানুষের।
রাজস্থানের এই ফোয়ারার উৎস কোথায় তা জানতে মানুষের মনের মধ্যে প্রবল কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। নানা মুনির নানা মতের মতো একাধিক বক্তব্য শোনা যায়। কেউ কেউ বলেন, মরুরাজ্যে ভূগর্ভ দিয়ে সরস্বতী নদীর ধারা বয়ে চলেছে। তবে ভূগর্ভস্থ জল বিশেষজ্ঞরা সেই দাবি সরাসরি খারিজ করে দেন। ভূগর্ভস্থ জল বিশেষজ্ঞরা এই ফোয়ারার জলের লবণাক্ততা বিচার করেন ও সিদ্ধান্তে আসেন, এই জল নদীর জল নয়, এই জল হল সুপ্রাচীন টেথিস সাগরের (Tethys Ocean)।
২৫ কোটি বছর আগে টেথিস সাগরের (Tethys Ocean) উপকূলেই ছিল থর মরুভূমি। জলের সঙ্গে উঠে আসা সাদা কাদামাটি ও বালি পরীক্ষা করার পর এমন ধারনাই পোষন করছেন বিজ্ঞানীরা। রাজস্থানের ফোয়ারার সঙ্গে উঠে আসা কাদামাটি ও বালি ৬০ লক্ষ বছর আগের টার্শিয়ারি যুগের বলেই দাবি করছেন ভূগর্ভস্থ জল বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, প্রাচীনকালে টেথিস সাগরের উপকূলেই ছিল বর্তমানের জয়সলমীর।
আরো পড়ুন: সিকিম ভ্রমণে নতুন চমক, পর্যটকদের জন্য খুলে যেতে চলেছে বাগরাকোটের লুপ পুল
এই ঘটনায় রাজস্থান গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডের প্রধান ডঃ নারায়ণ জাস ইনখিয়া নিজের বক্তব্য জানিয়ে বলেন যে, ভূগর্ভস্থ এই জল সরস্বতী নদীর নয়। তিনি আরও দাবি করেন, নদী নয়, ভূগর্ভে শিলার মাঝের গহ্বরে আবদ্ধ ছিল এই জল যা এই এলাকায় টেথিস সাগরের (Tethys Ocean) অস্তিত্বের অন্যতম প্রমাণ। আসলে ফোয়ারার অংশে যে জল বেরিয়েছে ভূগর্ভস্থ সেই জলের সঙ্গে মিশে রয়েছে সামুদ্রিক মাটি। জলে মিশে থাকা টোটাল ডিজল্ভড সলিডসের পরিমাণ ৫ হাজার- এই সবকিছুই তার বক্তব্যের সত্যতাকে প্রমাণ করে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ইনখিয়া আরও বলেন, সচরাচর দেখা যায় সাগরের জলের টিডিএস বেশি থাকে। তবে একাধিক খনিজ লবণ থাকার কারণেও এমনটা হতে পারে। বালির নমুনা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই জয়সলমিরের তানোটে ভূগর্ভস্থ জলের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল, সেই জল প্রস্তর যুগের বলেও প্রমাণ মেলে। এইবার কি তবে থর মরুভূমিতে সাগরের সন্ধান মিলল? সত্যি বিধাতার বানানো এই রাজস্থানে কত অসম্ভবই না সম্ভব হয়। আপাতত সকলেই বিশেষজ্ঞদের বিস্তারিত রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন।