IAS: আগ্রার ১৩ বছরের কিশোরী ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতো বড় হয়ে আইএএস অফিসার হবে সে। কিন্তু তার ভাগ্যে হয়তো অন্য কিছুই ছিল, বিধাতা পুরুষের ইচ্ছাই তাই আমূল পরিবর্তন হয়ে গেল সেই মেয়ের জীবন। মহাকুম্ভ মেলায় গিয়েছিল ১৩ বছরের কিশোরী আর তারপরে পরিবর্তন হয়ে গেল তার জীবনের। এমনকি তার মা-বাবা ও নিয়ে ফেললেন চরমতম সিদ্ধান্ত।
মহাকুম্ভে গিয়ে সাধুর হাতে মেয়েকে তুলে দিলেন মা বাবা। মা-বাবার সঙ্গে ওই মেলায় গিয়েছিল সে। আগ্রা থেকে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে গিয়েই তার মনোভাব হঠাৎ করে পরিবর্তন হয়ে যায়। যে মেয়ে দেখতো আইএএস (IAS) অফিসার হওয়ার স্বপ্ন, সবকিছু ত্যাগ করে সে সন্ন্যাসিনী জীবনকে বেছে নেয়। খুব অদ্ভুত রকম ভাবে তার বাবা-মা ও এই বিষয়টিকে সমর্থন করেন এবং সেখানে একটি সাধুর আশ্রমে মেয়েকে রেখে আসেন।
মেয়ের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা না করে, তাদের ১৩ বছরের মেয়ে যখন জানায় জাগতিক সমস্ত বিষয় থেকে নিজেকে সরিয়ে ও আই এ এস হওয়ার (IAS) নিজের স্বপ্ন ভুলে, সন্ন্যাসিনী হতে চায় সে, তখন মা-বাবাও এই বিষয়টিকে ভগবানের ইচ্ছে বলে মেনে নেন। মেয়ের ইচ্ছা পূরণে তারা মেয়েকে আশ্রমে রেখে আসেন। আসলে মহা কুম্ভের মেলায় গিয়ে তেরো বছরের ওই কিশোরের আত্ম উপলব্ধি হয়। রাতারাতি বদলে যায় তার মানসিকতা।
কিশোরীর মা রিমা সিং বলেন, আমাদের গ্রামে ভাগবত কথা শোনাতে আসা মহন্ত কৌশলগিরি মহারাজ কাছে আমার মেয়ে রাখী দীক্ষা নিয়েছিল। এর পর কৌশলগিরি মহারাজের আমন্ত্রণেই আমার মেয়েকে নিয়ে মহাকুম্ভের মেলায় আসি। আমার স্বামী সন্দীপ ও দুই মেয় রাখি ও নিক্কির সঙ্গে এখানে এসেছি। এখানে এসেই রাখীর মধ্যে আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করি। একদিন ও আমাদের জানায়, ইহজগতের সমস্ত চাহিদা ও স্বপ্ন (IAS) ছেড়ে সে সন্ন্যাসিনী হতে চায়। এটাই হয়তো ভগবানের ইচ্ছে ছিল তাই আমরাও আর কোনও আপত্তি জানায়নি।
আরো পড়ুন: এসি রেস্তোরা চালাতে নন্দিনী দির খরচ শুনলে মাথায় হাত পড়বে
রিমা বলেন,‘রাখী ছোটবেলা থেকেই আই এ এস (IAS) অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখত। মহাকুম্ভে এসে সে স্বপ্ন ছেড়ে সন্নাসিনী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” অন্যদিকে মহন্ত কৌশলগিরি মহারাজ সংবাদসংস্থাকে বলেন, “ওর উপর আমরা কোনও চাপ দিইনি। নিজে থেকেই জাগতিক বিষয়গুলি থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করেছিল। দীর্ঘদিন ধরেই সিং পরিবারের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে। ওদের আর্জি মেনেই রাখিকে আশ্রমে রাখতে রাজি হয়েছি। এবার থেকে ও গৌরী গিরি নামে পরিচিত হবে।’
অন্যদিকে মেয়েকে দূরে রাখা প্রসঙ্গে মা রিমা সিং বলেন,‘মা হিসেবে তো মেয়ের জন্য সর্বদাই উদ্বেগ থাকবে। কোথায় রয়েছে, কী করছে, খোঁজ খবর নিতে মন চাইবে। আত্মীয়রাও প্রশ্ন করছেন, কেন মেয়েকে আশ্রমে দিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা। সকলকেই জানিয়েছি এটা ভগবানের ইচ্ছে।’ জুনা আখড়ার এক মহন্ত বলেন,‘গৌরীর পিণ্ডদান প্রক্রিয়া ও অন্যান্য ধর্মীয় রীতিনীতি শুরু হবে আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে। তার পর আনুষ্ঠানিকভাবে গুরু পরিবারের সদস্য হিসেবে মান্যতা পাবে সে, এরপর সে পরিচিত হবে গৌরী গিরি নামে।’