Gangasagar: গঙ্গাসাগর মেলার মূল কেন্দ্রবিন্দু কপিল মুনির আশ্রম, কে এই কপিল মুনি

মকর সংক্রান্তি হিন্দুদের কাছে এক বিশেষ দিন। পিঠেপুলির উৎসব পালন করা ছাড়াও  মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগর (Gangasagar) যাওয়ার এক রীতি প্রচলিত রয়েছে এই বাংলায়। আজ মঙ্গলবার সেই মকর সংক্রান্তি। পৌষ মাসের শেষ দিন এই মকর সংক্রান্তি পালন করা হয়। এই মকর সংক্রান্তিতে কপিল মুনির আশ্রমকে কেন্দ্র করেই পুনার্থীরা মেতে ওঠে পূর্ণ স্নানে। কিন্তু কে এই এই কপিলমুনি?

বৈদিক ঋষি কপিল সংখ্যা দর্শনের অন্যতম প্রবর্তক। তিনি তার বিপুল তেজের জন্য বিখ্যাত। বিষ্ণু পুরাণে কথিত আছে, তিনি নাকি এক দৃষ্টিতেই ভষ্মীভূত করে দিয়েছিলেন সাগর রাজার ষাট হাজার পুত্রকে। সাগর ইক্ষাকু বংশের রাজা ছিলেন এবং  তিনি পৃথিবীতে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে তৎপর হয়েছিলেন। তার জন্য তিনি অশ্বমেধ যজ্ঞ শুরু করেন। এতে দেবরাজ ইন্দ্র ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। তখন তিনি উপায় না দেখে তার ঘোড়াটিকে চুরি করেন এবং রেখে যান কপিল মুনির এই আশ্রমে।

কপিলমুনি তখন পাতালে গভীর ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। ইতিমধ্যে সাগর রাজা তার পুত্রদের নির্দেশ দেন ঘোড়াটিকে খুঁজে বার করতে। তখন পুত্ররাও নির্দেশ অনুযায়ী ঘোড়া খুঁজতে খুঁজতে কপিলমুনির আশ্রমে উপস্থিত হন এবং ধারণা হয় মুনি বুঝি ঘোড়াটিকে চুরি করেছেন এবং তাকে চরমভাবে অপমানও করেন। এতে মুনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন এবং তার দৃষ্টিতে ভস্ম করে দেন সাগর রাজার ষাট হাজার পুত্রদের।

আরো পড়ুন: শুক্র ও শনির ধনাঢ্য যোগে, ফুলে ফেঁপে উঠবে এই তিন রাশির জাতক-জাতিকারা

তবে এ গল্প এখানেই শেষ নয়। সাগর রাজার বংশের পঞ্চম প্রজন্মের উত্তর পুরুষ ছিলেন ভগীরথ। তিনি তপস্যার মাধ্যমে ব্রহ্মাকে সন্তুষ্ট করেন এবং তখন ব্রহ্মা তাকে বর প্রদান করেন। প্রজাপতির বরেই স্বর্গের নদী গঙ্গাকে নামিয়ে আনেন পৃথিবীতে। তখন এই গঙ্গাকে জটায় ধারণ করেন মহাদেব। ভগীরথ মহাদেবের আরাধনা শুরু করে। মহাদেব গঙ্গাকে মুক্ত করেছিলেন। তারপর গঙ্গা বইতে শুরু করলে তাকে শঙ্খ বাজিয়ে পথ দেখিয়ে এই মকর সংক্রান্তির দিনেই গঙ্গাসাগরে (Gangasagar) নিয়ে আসেন ভগীরথ।

এই পবিত্র গঙ্গার স্পর্শেই সাগর রাজার ষাট হাজার পুত্র আবার প্রাণ ফিরে পায়। এই বিশ্বাস আজও মানুষের মনে রয়ে গেছে, মকর সংক্রান্তির এই পুণ্য দিনে পুণ্য তিথিতে গঙ্গা ও বঙ্গোপসাগরে মিলন স্থল এই গঙ্গাসাগরে (Gangasagar) স্নান করে সমস্ত পাপস্খলন করতে চান পুন্যার্থীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *