ভারতের প্রথম ট্রেন যাত্রার সূত্রপাত ঘটে ১৮৫৩ সালের ১৬ই এপ্রিল। সেদিন বোম্বের নিকটবর্তী বোরি বন্দর থেকে শুরু হয়েছিল ভারতীয় ট্রেনের যাত্রাপথ। তবে পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ সরকার কিন্তু সহজে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেননি, অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়েই ভারতীয় রেলের সূচনা হয়েছিল। সেই দিনের পর থেকে রেলযাত্রা আজও ভারতের ইতিহাসে এক অন্য ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।
১৫০ বছরেরও অনেক পুরনো ট্রেন আজও ছুটে চলেছে বছরের পর বছর ধরে। এখনও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছে এইসব ট্রেন। জানা যায়, ১৮৫৩ সালে ১৬ই এপ্রিল যেদিন প্রথম রেল যাত্রা শুরু হয়, সেই দিনটি সরকারি ছুটির দিন হিসাবে ঘোষিত হয়েছিল। ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ২১ বার তোপধ্বনিও করা হয়েছিল।
এবার জেনে নেওয়া যাক, ভারতের কিছু প্রাচীনতম ট্রেন সম্পর্কে, যা আজও অবিরাম ছুটে চলেছে। তালিকার প্রথমেই যার নাম আসে সেটি হল কালকা মেল। ১৮৬৬ সালের ১ই জানুয়ারি এই ট্রেনের যাত্রাপথ শুরু হয়। এবছর এই ট্রেনের ১৫৮ তম বার্ষিকী পালন করা হল। এরপর যার সম্পর্কে বলব, সেটি হল ফেয়ারী কুইন। এটি একটি বাষ্পীয় লোকোমোটিভ যা ১৮৫৫ সালে চালু করা হয়েছিল। নয়া দিল্লি থেকে আলওয়ারের মধ্যে চলে এই ট্রেন। ১৮৮১ সালে চালু হয় দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। এটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত। দার্জিলিংয়ের পাহাড়ের মধ্য দিয়ে ছুটে চলে এই ট্রেন।
আরও পড়ুন: যাত্রী সুরক্ষায় বড় সিদ্ধান্ত রেলের, বসছে এআই ক্যামেরা
এরপর আসছি কালকা সিমলা রেল নিয়ে। ১৯০৩ সালে এর যাত্রাপথ শুরু হয়। কালকা থেকে সিমলা পর্যন্ত চলে এই বিখ্যাত ট্রেন। ১৯০৮ সালে চালু হয় নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ে, যা ইঞ্জিনিয়ারিং জগতের এক বিস্ময়। এটিও ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত। তামিলনাড়ুর সমভূমিকে নীলগিরির পাহাড়ের সাথে যুক্ত করেছে এই ট্রেন।
১৯৯২ সালে চালু হয় পাঞ্জাব মেল, যেটি মুম্বাই ও ফিরোজপুর রুটের মধ্যে চলে। ভারতীয় রেল ইতিহাসে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন হল ফ্রন্টিয়ার মেল, যেটি ১৯২৮ সালে ১ই সেপ্টেম্বর চালু হয়। ১৯৬৬ সালে এই ট্রেনের নাম পরিবর্তন করে গোল্ডেন টেম্পেল এক্সপ্রেস করা হয়। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে গ্রান্ড ট্রাঙ্ক এক্সপ্রেস। লাহোর থেকে মেট্টুপালায়াম পর্যন্ত চলে এই ট্রেন। ডেকান কুইনের যাত্রাপথ শুরু হয় ১৯১০ সালে। ভারতের প্রথম নিবেদিত কমিউটার ট্রেনগুলির মধ্যে অন্যতম এটি। পুনে এবং মুম্বাইকে সংযুক্ত করছে এই ট্রেন।