বানতলা চর্মনগরী এলাকায় সম্প্রতি ঘটে গেছে এক চমকপ্রদ ঘটনা। ম্যানহোলে নেমে কাজ করতে গিয়ে মারা গেছেন তিনজন শ্রমিক। রাজ্যে বেশ কিছুদিন বিষয়টি নিয়ে শোরগোল চলছিল। তবে বর্তমানে রাজ্য সরকার চাইছে বানতলা চর্মনগরী পরিচালনা করতে। রাজ্য সরকারের মতে এতে নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা দুটোই বৃদ্ধি পাবে। তাই বানতলা চর্মনগরীর দায়িত্ব নিতে চলেছে রাজ্য সরকার।
তাহলে এতদিন পর্যন্ত কার অধীনে ছিল এই চর্মনগরী? বানতলা চর্মনগরী দেখভাল করত ক্যালকাটা লেদার কমপ্লেক্স ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশন। তাদের হাত থেকে এই দায়িত্ব চলে আসবে রাজ্য সরকারের কাছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শুধুমাত্র একটি সংস্থার হাতে ছেড়ে দেওয়া যুক্তিযুক্ত কাজ নয়। সেই কারণেই রাজ্য সরকারের অধীনে আসতে চলেছে। নবান্ন সূত্রে খবর, তবে বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক পর্যন্ত হয়েছে। সেখানে সংগঠনের কর্তাদের এই প্রস্তাব দেওয়া হলে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দেন।
মুখ্যমন্ত্রী সর্বদাই রাজ্যকে উন্নত করার চেষ্টা করেছে এবং তিনি শিল্পের পক্ষপাতী, পাশাপাশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হোক সেটাও দিয়ে চান। বানতলা চর্মনগরীকে যাতে আরও উন্নতমানের করা যায় তারজন্য সর্বরকম চেষ্টা করছে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। তাই এমন প্রস্তাব দিয়েছেন। বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, বানতলা চর্মনগরী পরিচালনার দায়িত্ব রাজ্য সরকার নিতে চায়। সেদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুর ও নগোরন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ–সহ সিনিয়র অফিসাররা। মুখ্যমন্ত্রী এই প্রস্তাব একেবারেই রাজি হয়ে গেছে ক্যালকাটা লেদার কমপ্লেক্স ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়েও আলোচনা হয়েছে সেই বৈঠকে। চর্মনগরীর পরিচালনার দায়িত্বে আসতে চলেছে কেএমডিএ বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: দূরপাল্লার বাসের টিকিট কাটা নিয়ে চিন্তিত? হাবড়ায় হচ্ছে টিকিট বুকিং কাউন্টার
রাজ্যে বিনিয়োগ বাড়ুক সেটা চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও, এতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। বাংলার বেকার ছেলে মেয়েদের কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপুল কর্মসংস্থান হলে মানুষের আর্থিক ঘাটতি অনেকটাই লাঘব হবে। সেক্টর-৫ তথ্যপ্রযুক্তি হাব রয়েছে নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটির অধীনে। আর ২০১৫ সাল থেকে বানতলা চর্মনগরী সরকারিভাবে নগোরন্নয়ন দফতরের অধীনে আছে। সেক্টর-৬ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপের অংশ হওয়ার পর কদিন আগেই ঘটে গেছে চরম দুর্ঘটনা যেমন, চর্মনগরীর নিকাশি নালা পরিষ্কার করতে গিয়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। নবান্ন এই ঘটনার পরেই কড়া হাতে দায়িত্ব তুলে নিতে চাইছে। যার জন্য শ্রমিকদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়। তাই সেক্টর-৬ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ বা বানতলা চর্মনগরীর পরিচালনার দায়িত্ব হাতে নিতে চাইছে রাজ্য সরকার। যাতে বানতলা চর্মনগরীর আরো উন্নতি সাধন হয় সেই চেষ্টাই করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
অ্যাসোসিয়েশনের কর্তাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক যখন ইতিবাচক হয়েছে ঠিক তখনই যেন আশার নতুন দিগন্ত খুলে গেছে। ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি নিয়ে একেবারেই রাজি হয়ে গেছে ক্যালকাটা লেদার কমপ্লেক্স ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক জিয়া নাফিস বৈঠক শেষে বলেন, রাজ্য সরকারের প্রস্তাবে তারা রাজি। বিষয়টি নিয়ে এবার সংগঠনের সদস্য দের সঙ্গে বৈঠক হবে। বৈঠকের পরে চরম সিদ্ধান্তের কথা রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্য সরকারের আওতায় এলে চর্মনগরীর জল, নিকাশি, আলো–সহ নানা পরিষেবা কেএমডিএ দেবে বলে সূত্রের খবর।