সাদা বরফের চাদরে ঢাকা রাস্তা ঘাট, রাজস্থান না কাশ্মীর এক ঝলকে দেখে বোঝা মুশকিল

বরফাবৃত ভূস্বর্গ কাশ্মীরের চিত্র অনেকের কাছেই পরিচিত। কিন্তু আজকের এই প্রতিবেদনে যে চিত্র ধরা পড়েছে তা কিন্তু কাশ্মীরের নয়। কোন জায়গার এই ছবি জানলে অবাক না হয়ে পারবেন না। কোন যাদুকাঠির ছোঁয়ায় যেন বদলে গেছে সবকিছু। কখনো কি শুনেছেন মরুভূমিতেও বরফ পড়ে? আবহাওয়ার খামখেয়ালি অবস্থার জন্য রাজস্থানের চুরু এবং সরদার শহরের ছবিটা হয়েছে একেবারে পহেলগাঁওয়ের মতো। মরুভূমির বুকে যেখানে গরমকালে তাপমাত্রা গড়ে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকে, সেখানকার চিত্র এখন অন্যরকম। একটানা ভারী বৃষ্টিপাত এবং শিলাবৃষ্টিতে সাদা চাদরে ঢাকা রাজস্থানের চুরু।

হঠাৎ করে আবহাওয়ার এই পরিবর্তন কেন? আবহাওয়ার এই উল্টোপথে হাঁটার কারণেই প্রবল বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টি। সাদা ‘তুষারে’ ঢেকে গেছে গোটা উঠোন। জায়গাটি কাশ্মীর নাকি মরুদেশ রাজস্থান তা বোঝা মুশকিল। সোশ্যাল মিডিয়াতে রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে এই ছবি। অনেকে যদিও একে মরুশহর রাজস্থান বলে মনে করেনি বরং ভাবছে ভূস্বর্গ কাশ্মীর। আজব আবহওয়ার সাক্ষী হয়ে রইলো রাজস্থানের চুরু। আইএফএস আধিকারিক প্রবীণ কাসওয়ান সম্প্রতি শেয়ার করেছেন এই পোস্ট। ‘বরফের’ সাদা চাদরে ঢাকা বিরাট উঠোন, বাড়ি, রাস্তার ছবি শেয়ার করেছেন তিনি।

পাশাপাশি তিনি লিখেছেন, এটা কাশ্মীর নয়, রাজস্থানের চুরু। গরমে যেখানকার তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রিতে গিয়ে পৌঁছয় সেখানকার এই অবস্থা অবাক করার মত। আবহাওয়ার কী খামখেয়ালিপনা। শিলাবৃষ্টির ভিডিও শেয়ার করে তিনি আরও লিখেছেন, দেখে মনে হচ্ছে আকাশ থেকে যেন বরফ পড়ছে। সপ্তাহ শেষে টানা বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টির জেরে সতর্কতা জারি করেছে আবহওয়া দপ্তরও। শিলাবৃষ্টির দাপটে সাদা চাদরে ঢেকে গেছে রাজস্থান। হঠাৎ করে দেখলে অনেকেরই হয়তো বিশ্বাস হবে না। ছবিটি শেয়ার করে সত্যতা প্রমাণ করেছেন ফরেস্ট অফিসার পারভীন কাসওয়ান। শনিবার ভারতীয় বন পরিষেবা (আইএফএস) এর অফিসার পারভীন কাসওয়ানের শেয়ার করা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সাদা চাদরে ঢাকা বিস্তীর্ণ এলাকা। তিনি সমাজমাধ্যমে শেয়ার করেছেন তুষারাবৃত ঘরবাড়ি এবং রাস্তাঘাটের ভিডিও।

আরও পড়ুন: রিলায়েন্স এবং বিপির থেকে টাকা চাইল ওএনজিসি, আনল চরম অভিযোগ

কেন এমন অদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো রাজস্থানে? ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তি বেলচা করে তার দরজা থেকে সাদা শিলা সরাচ্ছেন। পাহাড়ি এলাকায় এই ধরনের জীবনযাত্রার সঙ্গে বেশ পরিচিত মানুষজন। কিন্তু রাজস্থানে এটি কি করে সম্ভব? অঝোর ধারা ও শিলাবৃষ্টি দেখে একেবারে তাজ্জব বনে গিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় মানুষের কাছে এ যেন এক নতুন অনুভূতি। শিলাবৃষ্টি ছবিতে সুন্দর লাগলেও কৃষিজীবী মানুষের কাছে এটি ক্ষতির কারণ। এই শিল ফসল নষ্ট করে দেয়।

সপ্তাহান্তে এই বৃষ্টিপাত এবং শিলাবৃষ্টির কারণে আবহাওয়া বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে সতর্কতা জারি করেছে। শ্রীগঙ্গানগর, চুরু, বিকানের এবং আলওয়ারে আবহাওয়ার চরম রূপ দেখা গিয়েছে। ফসলের চরম ক্ষতি হবে এমনটাই সতর্কতা বার্তা জানানো হয়েছে। তবে বৃষ্টির ফলে কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে।

আবহাওয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার জয়পুর এবং ভরতপুর বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছেন। হনুমানগড়ে ২.৫ মিমি, গঙ্গানগরে ০.৩ মিমি এবং বিকানেরে ৩.২ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। পাশাপাশি চুরু এবং জয়সলমেরের বেশ কয়েকটি এলাকায়ও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। ২ মার্চ থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। শিলাবৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা একটু কমলেও মার্চ মাস থেকে রাজ্যে তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত গড় তাপমাত্রা থাকবে বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *