তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পে আশার আলো! কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এগোবে কাজ

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে গতি পেতে চলেছে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত কাজ দ্রুত শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যদিও এই প্রকল্পের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ভাবাদিঘি নিয়ে বিতর্ক। একদিকে গ্রামবাসীদের দাবি, দিঘি বাঁচিয়ে রেলপথ তৈরি হোক, অন্যদিকে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের চাপ রয়েছে।

আট বছর ধরে থমকে প্রকল্প

এই রেল প্রকল্পের কাজ আটকে ছিল দীর্ঘ ৮ বছর। মূলত ভাবাদিঘি বাঁচাও আন্দোলন এবং জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সমস্যার জন্য প্রকল্পের অগ্রগতি হয়নি। কলকাতা হাইকোর্ট এবার স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে—এই জট দ্রুত কাটিয়ে তিন মাসের মধ্যে ভাবাদিঘি অংশের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। পাশাপাশি, যেখানে জমির ক্ষতিপূরণ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে, সেখানে ৬ সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

আন্দোলনকারীদের দাবি ও হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

ভাবাদিঘির আন্দোলনকারীরা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেও তাঁদের অবস্থান বদলায়নি। তাঁদের দাবি, দিঘি বুজিয়ে নয়, বিকল্প উপায়ে রেললাইন তৈরি করা হোক। যদিও হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, কয়েকশো মানুষের স্বার্থের চেয়ে লাখো মানুষের সুবিধা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই দক্ষিণবঙ্গের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণে এই প্রকল্প চালু করা প্রয়োজন।

দক্ষিণবঙ্গের জন্য বড় সুখবর

তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল চালু হলে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং হাওড়ার মধ্যে সংযোগ আরও ভালো হবে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুতগতির হবে এবং মানুষ সময় বাঁচাতে পারবে। বর্তমানে তারকেশ্বর-আরামবাগ থেকে গোঘাট পর্যন্ত রেললাইন তৈরি হয়ে গেছে, কামারপুকুর স্টেশনও প্রস্তুত। তবে ভাবাদিঘি অংশেই কাজ থমকে ছিল।

আরও পড়ুন: হোলির দিন কখন চলবে মেট্রো? না জানলে জেনে নিন বিস্তারিত সময়সূচি

জমি অধিগ্রহণ ও রাজনৈতিক উত্তেজনা

ভাবাদিঘি এলাকায় রেললাইনের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই বিরোধ বাড়ে। ২০১৭ সালে অভিযোগ ওঠে, শাসক দলের মদতে দিঘি বুজিয়ে রেলপথ তৈরি করার চেষ্টা চলছে। এরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা তৃণমূল পার্টি অফিসে হামলা চালায়, বাইক পুড়িয়ে দেয়, এমনকি নেতাদের গণধোলাইও দেওয়া হয়। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়, যা আজও রয়েছে।

প্রকল্পের ভবিষ্যৎ

বর্তমানে কামারপুকুর স্টেশন থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেললাইন তৈরির কাজ জোরকদমে চলছে। তবে ভাবাদিঘি অংশের বিরোধ মিটলেই প্রকল্প দ্রুত শেষ হবে। হাইকোর্টের নির্দেশের পর প্রকল্পে নতুন আশার আলো দেখা দিয়েছে, এখন দেখার বিষয়—কবে এই স্বপ্ন সফল হয়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *