কলকাতা মেট্রোর পরিষেবায় আসছে বড় পরিবর্তন। এবার কিছু নির্দিষ্ট স্টেশনে আর টিকিট কাউন্টার থাকবে না! মেট্রো কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সময় বাঁচাতে আধুনিক প্রযুক্তি আনতে চলেছে। ধীরে ধীরে পুরনো পদ্ধতির বদলে “ই-স্টেশন” চালু করা হবে, যেখানে সম্পূর্ণ ডিজিটাল উপায়ে টিকিট কাটতে হবে।
কোন স্টেশনগুলোতে টিকিট কাউন্টার থাকবে না?
১লা আগস্ট থেকে পার্পল লাইনের তারাতলা, শখেরবাজার এবং অরেঞ্জ লাইনের কবি সুকান্ত স্টেশনে বন্ধ হয়ে যাবে টিকিট কাউন্টার। এগুলো হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল “ই-স্টেশন”, যেখানে কোনও ম্যানুয়াল কাউন্টার থাকবে না। যাত্রীরা কেবলমাত্র ডিজিটাল পদ্ধতিতে টিকিট কাটতে পারবেন।
তাহলে কলকাতা মেট্রোর টিকিট কীভাবে কাটবেন?
কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীরা স্মার্ট কার্ড রিচার্জ মেশিন ব্যবহার করে টোকেন, স্মার্ট কার্ড বা কিউআর কোড ভিত্তিক টিকিট কিনতে পারবেন। অনলাইনে ইউপিআই, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড বা মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে পেমেন্ট করেও টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। যাত্রীদের জন্য স্টেশনে স্বয়ংক্রিয় কিয়স্ক মেশিন থাকবে, যেখানে সহজেই স্মার্ট কার্ড রিচার্জ করা যাবে।
এই মেশিনগুলির ব্যবহার সম্পর্কে স্টেশনে নির্দেশিকা থাকবে, যাতে যাত্রীরা সহজেই নতুন পদ্ধতিটি রপ্ত করতে পারেন। যদি কারও কোনও সমস্যা হয়, স্টেশনের কর্মীরা সহায়তা করবেন। যাত্রীরা মেট্রো রেলের অফিশিয়াল মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করেও কিউআর কোড ভিত্তিক টিকিট কাটতে পারবেন।
আরও পড়ুন: তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পে আশার আলো! কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এগোবে কাজ
ভবিষ্যতে কি সব স্টেশনেই থাকবে এই ব্যবস্থা?
কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথমে এই তিনটি স্টেশনে পরীক্ষামূলকভাবে “নো কাউন্টার বুকিং” চালু করা হচ্ছে। যদি এটি সফল হয়, তবে ভবিষ্যতে আরও স্টেশনে এই পদ্ধতি চালু করা হবে। এর ফলে যাত্রীরা দ্রুত টিকিট কাটতে পারবেন এবং লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হবে না। এছাড়া, ভবিষ্যতে স্মার্ট কার্ড ব্যবহারকে আরও সহজ করতে নতুন নতুন সুবিধা যোগ করা হতে পারে। যেমন, স্টেশন ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় স্মার্ট কার্ড রিচার্জ করার বুথ রাখা হতে পারে বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে স্মার্ট কার্ডের ব্যালেন্স রিচার্জ করার সুবিধা আরও উন্নত করা হতে পারে।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের মতে, নতুন এই ব্যবস্থা যাত্রীদের সময় বাঁচাবে, টিকিট কাটার ঝামেলা কমাবে এবং পরিষেবাকে আরও উন্নত করবে। ডিজিটাল টিকিটিংয়ের ফলে যাত্রা হবে আরও সহজ, দ্রুত ও আধুনিক। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে মেট্রো স্টেশনগুলিতে গাইডলাইন ও সহায়ক কর্মী থাকবেন, যাতে সবাই সহজেই নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে অভ্যস্ত হতে পারেন। যাত্রীদের মধ্যে ডিজিটাল পদ্ধতির গ্রহণযোগ্যতা কেমন, তা দেখেই ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করা হবে। তাই এই উদ্যোগ সফল হলে কলকাতার মেট্রো পরিষেবা আরও আধুনিক ও সময়োপযোগী হবে।