হিন্দু ধর্মের মানুষের কাছে দোল পূর্ণিমা হল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই বিশেষ তিথিতে সকলেই পূজা পার্বণ করে থাকে। জানেন কবে পালন করা হয় দোল পূর্ণিমা? ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমা তিথিতে হয় দোল। হিন্দু ধর্মের মানুষের মধ্যে বিশ্বাস যে, এদিন বৃন্দাবনে রাধা ও গোপীদের সঙ্গে রঙের খেলায় মেতে উঠতেন শ্রীকৃষ্ণ। সেই কারণেই এটি পরবর্তী কালে হোলি উৎসবের পরিচিতি পায়। এবছর দোল পূর্ণিমা ১৪ মার্চ, শুক্রবার।তবে এই বিশেষ দিনে যদি সত্যনারায়ণ পুজো করা যায় তাহলে দিনটির গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পায়।
বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২৯ ফাল্গুন এবং ইংরাজি ক্যালেন্ডার দেখলে ১৪ মার্চ দোল পূর্ণিমা। যদিও পূর্ণিমা তিথি শুরু হয়ে যাচ্ছে ১৩ মার্চ, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২৪ মিনিটে। ওইদিনটিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তবে শুক্রবার সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে শেষ হচ্ছে এই তিথি। এই বিশেষ দিনে যদি সত্যনারায়ণ পুজো করা যায় তাহলে ঘরের শ্রী বৃদ্ধি হবে অবশ্যই।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, ভগবান শ্রীবিষ্ণু সত্যনারায়ণ রূপে পৃথিবীতে আসেন দোল পূর্ণিমায়। তাই জীবন থেকে সমস্তরকম অশান্তি এবং বিপদকে দূরে রাখতে চাইলে অবশ্যই এই বিশেষ দিনে সত্যনারায়ণ পুজো করুন। ভক্তদের জীবন ভরে উঠবে সুখ এবং শান্তিতে। যারা বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের কাছে কিন্তু এই দিনটির মাহাত্ম্য একেবারে অন্যরকম। কারণ, এই দিন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাব হয়।
কখন পুজো করলে ভগবান সন্তুষ্ট হবেন চলুন জেনে নিই এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে। সকালে অথবা সন্ধ্যাবেলায় এই পুজো করতে হয়। পুজোর শুরু করার আগে অবশ্যই একটি চৌকিতে সত্যনারায়ণের ছবি রাখুন। সামনে রাখুন একটি ঘট। পুজোর জায়গায় ঘিয়ের প্রদীপ অবশ্যই জ্বালাবেন।
আরও পড়ুন: সাবধান, আসন্ন হোলিতে এড়িয়ে চলুন এই ৫ কাজ, না হলে ছারখার হয়ে যাবে জীবন
সত্যনারায়ণ পুজো করতে হলে কোন কোন সামগ্রীর একান্ত দরকার চলুন জেনে নিই। এই সামগ্রীগুলো না হলে কখনোই সম্পূর্ণ হবে না সত্যনারায়ণ পূজো। মূর্তি বা ছবি, ঠাকুরের বস্ত্র, ধুতি, গামছা, পৈতে, সাদা ও হলুদ ফুল, গোটা চাল, নারকেল, মরশুমি ফল, নৈবেদ্য, কর্পূর, ধূপ, প্রদীপ, মধু, চিনি, হলুদ, আমের পাতা, পান, সুপারি, যজ্ঞ সামগ্রী, দেশি ঘি, মিষ্টি, গঙ্গাজল, সুতো, যজ্ঞের কাঠ ইত্যাদি।
সত্যনারায়ণ পুজো করার আগে আপনাকে প্রথমে শ্রী গণেশের পুজো করতে হবে। তারপর করুন নবগ্রহের পুজো। নবগ্রহ পুজো শেষ হলে ভগবান সত্যনারায়ণের ধ্যান করুন। যে সমস্ত উপকরণ আপনি পুজোর জন্য একত্রিত করেছেন তা ভগবানের উদ্দেশ্যে নিবেদন করুন। সত্যনারায়ণের পুজোয় সিন্নি দিতে কিন্তু ভুলবেন না। এরপর যজ্ঞ করুন। যজ্ঞ সম্পন্ন হলে ব্রতকথা পাঠ করুন। যাতে সকলের মঙ্গল হয় তার জন্য ভগবানের কাছে কামনা করুন। আরতি হয়ে গেলে সকলকে প্রসাদ ও সিন্নি বিতরণ করুন।