বসন্ত এসে গেছে, গানটি এখন আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে একেবারে উপযুক্ত। গাছের পাতা হলুদ হয়ে গিয়েছে। শরীরে দোলা দিয়ে যাচ্ছে ঠান্ডা বাতাস, পাশাপাশি গাছে দেখা যাচ্ছে পলাশ আর শিমুল ফুল। দক্ষিণবঙ্গের শান্তিনিকেতনের পরিবেশ যেন নজর কাড়ার মত। বসন্তের মৃদু হাওয়ার সঙ্গে দোল, রঙের খেলা, পলাশফুলের গন্ধ সবকিছুই যেন এক অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে।বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রতনপল্লি, সোনাঝুরির হাট, শ্যামবাটী, জামবুনি সহ বিভিন্ন জায়গাতে প্রতি বছর বসন্ত উৎসব পালিত হয়।
বসন্ত উৎসবে বাঙ্গালীর মন শান্তিনিকেতনে যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে ওঠে। খোয়াই, সোনাঝুরির হাট সহ নানা জায়গায় উৎসবে মেতে ওঠে বাঙালি। তবে চলতি বছরে নতুন নিয়ম চালু করেছে বনদপ্তর। তাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে এই বছর বসন্ত উৎসব হচ্ছে না শান্তিনিকেতনের খোয়াইয়ের সোনাঝুরির হাটে।
যারা ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা করেছিলেন দোল কাটাবেন শান্তিনিকেতনে তাদের সেই পরিকল্পনা একেবারে ভেস্তে গেছে। শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি খোয়াইয়ের হাটে বন দপ্তরের নিষেধাজ্ঞা থাকার জন্য পালন করা যাবে না বসন্ত উৎসব। পর্যটক থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রবেশ করার অনুমতি পেলেও রঙ খেলতে পারবে না। ২০১৯ সালের পর থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুধু ঘরোয়াভাবে বসন্ত উৎসব পালন করছে। বহিরাগতদের কোনভাবেই সেখানে প্রবেশ করার অনুমতি নেই। বোলপুর এবং শান্তিনিকেতনের নানা এলাকায় পৃথকভাবে বসন্ত উৎসব পালন করা হয়। বোলপুর বনদপ্তর এর অন্তর্গত সোনাঝুরির হাটে এতদিন ধরে বসন্ত উৎসব পালন করা হচ্ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে। তাও বন্ধ হল এই বছর থেকে।
আরও পড়ুন: অশোকে-পলাশে রঙিন হয়ে উঠেছে বাঁকুড়া, ঢল নামছে পর্যটকদের, থাকছেন কোথায়?
খবরটি প্রকাশিত হতেই যেসব পর্যটকেরা শান্তিনিকেতনে যাওয়ার জন্য টিকিট কেটেছিলেন তারা বাতিল করে দেবেন তেমনটাই ভাবছেন। বোলপুর বনদপ্তর যদিও অনুমতি দেবেনা বসন্ত উৎসব পালন করার। শান্তিনিকেতনে ঘুরতে আসা পর্যটকদের মন সেই কারণে ভারাক্রান্ত। অন্যদিকে আবার হাটের ব্যবসায়ীরা বনদপ্তরের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। বোলপুর বনদফতর সূত্রে খবর, যেহেতু জঙ্গল এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পর্যটকেরা বসন্ত উৎসব পালন করে তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রচুর গাছ। প্রচুর সংখ্যক গাড়ি আসায় পার্কিং করতে গিয়েও বন দফতরের জমি ও গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকেরা পরিকল্পনা করেছিলেন যে সোনাঝুরির জঙ্গলে দোল খেলবেন। এই পরিকল্পনা একেবারে ভেস্তে গেছে সেটাই বলা যায়।। তাই এখন শান্তিনিকেতন থেকে ফিরে আসছেন পর্যটকরা। এবার ছুটির দিন খুব ভাল করেছিল কারণ একসঙ্গে তিনদিন ছুটি পাওয়া যাচ্ছিল। যেহেতু শনিবার এবং রবিবার পড়ে গিয়েছে। যেহেতু দোল খেলা যাবে না সেই কারণে অন্যত্র চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পর্যটকেরা। ফলে ব্যবসায়ীদের বেশ অনেক টাকার ক্ষতি মেনে নিতে হবে।