পড়ুয়াদের রিসার্চ ইন্টার্নশিপের সুযোগ করে দিচ্ছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫০ কলেজ

নতুন শিক্ষানীতির আদলে ইতিমধ্যেই পরিবর্তন এসেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫০টি কলেজের স্নাতক কোর্সের নাম, সময়সীমা এবং সি‍লেবাস ইত্যাদি ক্ষেত্রে। তবে আবারো পরিবর্তন আসতে চলেছে চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি কোর্সেও। যেমন, অনার্স উইথ রিসার্চ এবং শুধুই অনার্স। তবে অনার্স উইথ রিসার্চ পড়লে, সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের সপ্তম ও অষ্টম সেমেস্টারে আরও এক দফায় রিসার্চ সংক্রান্ত ইন্টার্নশিপের জন্য নাম ‍লেখাতে হবে। কিন্তু মেজর কোর্সের ক্ষেত্রে রিসার্চ ইন্টার্নশিপ করতে পড়ুয়াদের মেনে নিতে হবে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত। প্রথম ছ’টি সেমেস্টারে অন্তত ৭৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। যাদের ৭৫ শতাংশ নম্বর থাকবে তাদের আবেদন রিসার্চ ইন্টার্নশিপের ক্ষেত্রে অবশ্যই গ্রহণ করা হবে।

কিন্তু কোন ক্ষেত্রে যদি পড়ুয়াদের প্রথম ছ’টি সেমেস্টারে ৭৫ শতাংশ নম্বর না থাকে তাহলে স্নাতকের অনার্স পড়ুয়াদের চার বছরের উইদাউট রিসার্চ ডিগ্রি নিয়েই পড়াশোনা করতে হবে। ইন্টার্নশিপ করার কোনোরকম সুযোগ পাবে না। বদলে তিনটি অতিরিক্ত ডিসিপ্লিন স্পেসিফিক কোর্স (ডিএসসিসি) পড়তে হবে। সে জন্য তিন কোর্সে চার ক্রেডিট করে মোট ১২ ক্রেডিট বরাদ্দ থাকবে।

এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গত ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট (ইউজি) কাউন্সিলের বৈঠকে। ইতিমধ্যে একটি কমিটি গড়ে তোলা হয়েছে রিসার্চ ইন্টার্নশিপ কোর্সের মডিউল তৈরি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বিভিন্ন বোর্ড অফ স্টাডিজ়ের চেয়ারম্যানদের নিয়ে। সেই কমিটির কাজ হল আপাতত রিসার্চ ইন্টার্নশিপের রূপরেখা তৈরি করা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র মারফত জানা গেছে যে, ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সাংবাদিকতা কোর্সের মতোই কলেজের সাধারণ ডিগ্রি কোর্সের পড়ুয়াদের জন্য দ্বিতীয় সেমেস্টার বা প্রথম বছরের পরই চালু হয়েছে সামার ইন্টার্নশিপ। কিন্তু রিসার্চ ইন্টার্নশিপের প্রধান লক্ষ্য হলো, তিন বছর বা ষষ্ঠ সেমেস্টারের পর বিষয়ভিত্তিক গবেষণায় পডুয়াদের স্কিল ওরিয়েন্টশন বৃদ্ধি করা।

আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে বিরাট আপডেট, এই শর্তগুলি না মানলে অ্যাকাউন্টে ঢুকবে না টাকা

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা অবশ্য দুটো বিষয় নিয়ে খুবই চিন্তিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজি কাউন্সিলের এক আধিকারিক প্রসঙ্গত জানিয়েছেন যে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যেমন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার কলেজ আছে, তেমনই আবার স্কটিশচার্চ, লোরেটো, লেডি ব্রেবোর্ন এবং আশুতোষ কলেজের পড়ুয়ারাও আছে। কোনরকম বৈষম্য যাতে সৃষ্টি না হয়, রিসার্চ ইন্টার্নশিপের বিষয় সেইসব ভেবেই করা উচিত।

সেক্ষেত্রেও কি বৈষম্যের সম্ভাবনা থাকছে? কোথাও পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি আবার কোথাও কম। কোন কোন শাখায় সুযোগ বেশি। যেমন আর্টসের বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস এবং এডুকেশন বিষয়ে প্রচুর পড়ুয়া আছে। উল্টোদিকে, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, গণিত এবং ইংরেজিতে তুলনামূলক কম পড়ুয়া। কমার্সের ক্ষেত্রে অনেক কর্পোরেটও আছে। ফলে কমার্সের শিক্ষক–শিক্ষিকাদের পক্ষে সহজেই রিসার্চের বিষয়বস্তু চূড়ান্ত করা সহজ। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বোর্ড অফ স্টাডিজ়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্তর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনা করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাসকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *