রংয়ের উৎসবে গোটা দেশ মেতে উঠবে আর কয়েকটা দিন বাদেই। দেশের বিভিন্ন জায়গায় নানাভাবে আয়োজিত হয় দোল উৎসব। ১৪ই মার্চ দেশজুড়ে এই প্রাণবন্ত উৎসব পালিত হবে। অনেকেই এই বিশেষ দিনটি আনন্দের সঙ্গে কাটাতে চান তাই কোথায় গেলে এই অনাবিল আনন্দ পাবেন চলুন জেনে নিই এই প্রতিবেদনে। হোলি উদযাপনের জন্য সেরা স্থান খোঁজার সময় অনেকেই বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। এই বছর যদি হোলি একটু ভিন্ন স্বাদে কাটাতে চান তাহলে চলে আসুন বারাণসী, বৃন্দাবন ও রাজস্থানের পুষ্করে। আশা করি নিরাশ হবেন না।
বারাণসী: গঙ্গার তীরে পালন করা হয় দোল উৎসব
আপনারা নিশ্চয়ই ভাবছেন কাশী অর্থাৎ বারাণসী হল তীর্থস্থান। কিন্তু এই জায়গাটি দোল উৎসবের জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এখানে গঙ্গার ঘাটে হোলির এক বিশেষ আয়োজন হয়, রঙের উল্লাসে মেতে ওঠেন দেশ-বিদেশের একাধিক মানুষ।
কিভাবে পৌঁছাবেন এখানে?
ট্রেনে করে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় বারাণসীতে। দিল্লি-বারাণসী সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস বা শতাব্দী এক্সপ্রেস দিয়ে যাওয়া যায়। এখানে যেতে সময় লাগে ১২-১৪ ঘণ্টা। স্লিপার ক্লাসের ভাড়া ৪০০ টাকা, প্রথম শ্রেণীর এসি ভাড়া ২৭০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। যদি বাসে করে যেতে চান তাহলে দিল্লি থেকে বাসেও বারাণসী যেতে পারেন। রাস্তার অবস্থার উপর নির্ভর করে ১৪-১৬ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। বাসের ভাড়া ৫৪০ থেকে ১৪০০ টাকা।
বৃন্দাবন: শ্রীকৃষ্ণের লীলাভূমিতে পালন করা হয় ঐতিহ্যবাহী দোল উৎসব
বৃন্দাবন হল হিন্দুদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত এবং দোল উৎসবের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় স্থান। শুধুমাত্র স্থানীয় বাসিন্দারা নয়, পর্যটকরাও এখানে আসেন হোলি উৎসব পালন করতে। রাস্তায় নাচেন এবং ভক্তিমূলক গান গেয়ে দোল উৎসব উদযাপন করেন।
কিভাবে পৌঁছাবেন এই স্থানে?
দিল্লির হযরত নিজামুদ্দিন বা নতুন দিল্লি রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে করে মথুরা জংশন পর্যন্ত যাওয়া যায়। স্টেশন থেকে বৃন্দাবনের দূরত্ব হলো ১৫ কিমি। ট্রেন ভাড়া ১৮০ থেকে ৮০০ টাকা। যদি বাসে করে যেতে চান তাহলে দিল্লির কাশ্মীরি গেট ও আনন্দ বিহার বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি বাস পাওয়া যায়। সময় লাগে ৩-৪ ঘণ্টা এবং ভাড়া ২৪০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
পুষ্কর: রাজস্থানের ঐতিহ্যবাহী হোলি
রাজস্থান এমনিতেই পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তার উপর এখানকার দোল উৎসব সত্যি বিখ্যাত। পুষ্কর তার উটের মেলা ও মনোরম হ্রদের জন্য বিখ্যাত। পাশাপাশি এখানে হোলি উৎসব ধুমধাম করে পালন করা হয়। যেখানে রাস্তায় রঙের লড়াই এবং বিভিন্ন আনন্দমুখর অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে।
কীভাবে যাবেন?
নতুন দিল্লি থেকে আজমের জংশন পর্যন্ত ট্রেনে যাওয়া যায়। সময় লাগে ৬-৭ ঘণ্টা। সেখান থেকে ১৫ কিমি দূরে পুষ্কর, যা বাস বা ট্যাক্সিতে ৩০ মিনিটের পথ। এছাড়া যদি বাসে করে যান তাহলে খুব সহজেই পৌঁছতে পারবেন রাজস্থানের পুষ্করে। দিল্লির কাশ্মীরি গেট ও আনন্দ বিহার থেকে সরাসরি পুষ্করের বাস পাওয়া যায়। সময় লাগে ১০-১২ ঘণ্টা। ভাড়া ৭০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
চলতি বছর যদি হোলির অভিজ্ঞতা একেবারে অন্যরকমের পেতে চান তাহলে বারাণসী, বৃন্দাবন ও পুষ্কর আপনার সেরা গন্তব্য হতে পারে। যাত্রার পরিকল্পনা করে আগেভাগেই টিকিট কেটে ফেলুন। এই সুযোগ হাতছাড়া করা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।