Celebration At Burning Ghat: সমাজ মাধ্যমে প্রায়ই এমন কিছু বিষয় দেখা যায় যা সত্যিই অবাক করে দেয় সকলকে। বহু মর্মান্তিক চিত্র ফুটে ওঠে চোখের সামনে, ফের একবার এরকমই একটি ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। শ্মশানভূমিতে ঘটে গেল এক আশ্চর্য ঘটনা, যা সত্যিই নাড়িয়ে দিয়েছে মানবসভ্যতাকে। ১০২ বছরের এক বৃদ্ধার মৃত্যুতে তার আত্মীয় পরিজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশীরা পর্যন্ত উদ্যান নৃত্যে মেতে রইলো DJ চালিয়ে। জ্বলন্ত চিতার পাশে দাঁড়িয়ে এরকম আচরণ অবাক করে দেওয়ার মত।
সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই নিন্দার ঝড় উঠেছে অশোকনগর থানার গুমা শ্মশানের এই অমানবিক দৃশ্য (Celebration At Burning Ghat) ঘিরে। হাবরা ২ নং পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ প্রবীর মজুমদার সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট করেছেন। প্রবীরবাবুর বক্তব্য, দিন যত যাচ্ছে মানুষ ততই যেন অমানবিক হয়ে যাচ্ছে। নিজের বাবা-মা থেকে শুরু করে ঠাকুমা কিংবা দাদু কারো প্রতি সেই টান আর নেই এই প্রজন্মের। ঘটনাটির তীব্র নিন্দা করেছেন এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
গুমা আদর্শ পল্লির বাসিন্দা মৃত বৃদ্ধার নাম হলো রাজুবালা দেবী। ঘটনা সম্পর্কে এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন যে, রাজুবালা দেবী মারা যাওয়ার পরে তাঁর আত্মীয় পরিজন ও প্রতিবেশীরা আনন্দে ডিজে বাজিয়ে উদযাপন করছেন (Celebration At Burning Ghat)। গুমা শ্মশানের এই ঘটনা অমানবিক আচরণের পরিচয় দিয়েছে। তবে এই ধরনের ঘটনা কিন্তু নতুন নয়, এরকম আগেও ঘটে গেছে বহুবার।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলাতেই দুই বছর আগে আগস্ট মাসে ঘটেছিল এমনই একটি ঘটনা। ১০০ বছর পার করে ‘দাদুর মৃত্যু’। বৃদ্ধের শেষ ইচ্ছে ছিল তার শেষকৃত্য যেন হয় একেবারে ভিন্নভাবে (Celebration At Burning Ghat) । শোকের আবহে আনন্দের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে হাবরায়। গোটা গ্রামকে দেখা যায় শতায়ু বৃদ্ধের প্রয়াণে ডিজে বাজিয়ে নাচতে। পুরুষ মহিলা এবং প্রতিবেশীরাও পর্যন্ত এই নাচের আনন্দে শামিল হয়েছিল। হঠাৎ করে যেন শোক ভুলে সকলে মেতে উঠেছিল আনন্দে। এমনকি অবাক করার বিষয় হলো শেষকৃত্যেও চলে ডিজে, তাসা বাজিয়ে নাচ। হয়তো সাময়িকভাবে দেখা গিয়েছিল শোক কিন্তু পরবর্তী সময়ে নাতি নাতনি-সহ পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন ডিজে যাত্রায়। দাদুর ইচ্ছে অনুযায়ী, আনন্দের আবহে সম্পন্ন হয় শেষযাত্রা। মৃতদেহকে কাঁধে তুলে নাচ করা হয়েছিল পর্যন্ত।
আরো পড়ুন: সামনেই গঙ্গা সাগর মেলা, সেই আবহে নতুন করে সেজে উঠছে সৈকতগুলি
শতবর্ষ পেরিয়ে মৃত্যু হয় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরা থানার দেবেন হাজরার। বৃদ্ধের মৃত্যুতে বিভিন্ন বাজনা এবং ডিজে বাজিয়ে শেষকৃত্যে নামে ছোটরা। বৃদ্ধের শেষ ইচ্ছাকে সম্মান দিতে এই প্রয়াস নেয় তাঁর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা রীতিমত ডিজের তালে মেতে ওঠে। ডিজে বক্সের সঙ্গে ছিল খোল করতালও।
দেবেন হাজরার জন্ম বাংলার ১৩১০ সালে এবং মৃত্যু হয় ১৪২৯ সালে। মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ১১৯ বছর। বৃদ্ধের বয়সের যদিও কোন প্রমাণ পরিবারের কারোর কাছেই ছিল না। স্থানীয়রা অবশ্য বলেছেন যে, দেবেন হাজরা যাত্রা ভালোবাসতেন। তিনি বহু স্থানীয় মানুষকে যাত্রা শেখাতেন। বহু গ্রামে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন যাত্রার কারণে। সেইসময় টিভি , সোশ্যাল মিডিয়া ভাবনার অতীত। যাত্রার দৌলতে পরিচিতি পেয়েছিলেন যাত্রাগুরু হিসেবে। তাই গুরুর মৃত্যুতে ভিড় জমান প্রায় হাজার মানুষ।