Site icon লোকাল সংবাদ

মহাকুম্ভের জল নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট পেশ করল কেন্দ্রীয় সংস্থা, কি বলছে তারা?

মহাকুম্ভের জল

প্রতিনিধত্বমুলক

উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে ধুমধাম করে এখনো পালিত হচ্ছে মহাকুম্ভ। ১৪৪ বছর বাদে আয়োজিত এই মহাকুম্ভ কোটি কোটি মানুষের সমাগম হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ইতিমধ্যেই ৫১ কোটি পুণ্যার্থী স্নান করে ফেলেছেন সঙ্গমে। কিন্তু এই কুম্ভস্নানের জল নিয়ে প্রকাশ্যে আসলো এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। হিন্দুধর্মের মানুষের বিশ্বাস তিনটি নদীর সঙ্গমস্থলে স্নান করলে পুণ্যলাভ সম্ভব। কিন্তু কি বলছে কেন্দ্রীয় সংস্থা? তাদের মতে সঙ্গমের একাধিক জায়গার জল স্নানের উপযুক্তই নয়। রীতিমতো সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে দূষণ। বিষয়টি জাতীয় সবুজ ট্রাইব্যুনালকেও জানানো হয়েছে।

এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে সোমবার কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) কর্তৃক দাখিল করা একটি রিপোর্টে। প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত জলের নমুনাগুলিতে মল কোলিফর্মের মাত্রা অতিরিক্ত বেশি। স্নানের জন্য যে উপযুক্ত জলের প্রয়োজন হয় সেই পরীক্ষায় সফল হতে পারেনি সঙ্গমের একাধিক জায়গার জল। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) কর্তৃক নির্ধারিত, ‘পয়ঃনিষ্কাশন’ দূষণের একটি সূচক। বোর্ড কর্তৃক মল কলিফর্মের অনুমোদিত সীমা প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ২,৫০০ ইউনিট।

মানুষ পুণ্যলাভের আশায় ছুটে যাচ্ছেন মহাকুম্ভের উদ্দেশ্যে, কিন্তু আসলেও কি এই জলে পুণ্য লাভ করা সম্ভব?ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) এর চেয়ারপার্সন বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব, বিচার বিভাগীয় সদস্য বিচারপতি সুধীর আগরওয়াল এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য এ সেন্থিল ভেলের সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চে প্রয়াগরাজে গঙ্গা ও যমুনা নদীতে ‘পয়ঃনিষ্কাশন’ রোধ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলছিল। সেই মামলা চলাকালীন সময়ে সিপিসিবি ৩ ফেব্রুয়ারি এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা দেয়। রিপোর্টে স্পষ্ট চিহ্নিত করা হয়েছে কিছু অসঙ্গতি এবং নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয়।

আরও পড়ুন: ১৪৪ বছর পর আয়োজিত মহাকুম্ভ, পুণ্যস্নান করে কেমন অভিজ্ঞতা হল দেবলীনার?

মহাকুম্ভের বিভিন্ন জায়গার জল পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তার ফলে দেখা গেছে যে, নদীর জলের গুণমান, মল কলিফর্ম (FC) মাত্রা অনুসারে স্নানের জন্য জলের প্রাথমিক মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলার সময়, পাশাপাশি শুভ স্নানের দিনগুলিতে কোটি কোটি মানুষ স্নান করেছে সঙ্গমের জলে। এর ফলে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে মলের ঘনত্ব। রিপোর্টে এমনটাই সামনে এসেছে।

অবশ্য রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য একদিন সময় দেওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীকে। এখানেই শেষ নয়, এই দূষণের ব্যাপার নিয়ে ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দিয়ে বলে, ইউপিপিসিবির সদস্য সচিব এবং প্রয়াগরাজে গঙ্গার জলের গুণমান বজায় রাখার জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট রাজ্য কর্তৃপক্ষকে ১৯শে ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত পরবর্তী শুনানিতে ভার্চুয়ালি উপস্থিত হতে হবে।

বেঞ্চ এই বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডকে (UPPCB) এবং বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু সেই পূর্ববর্তী নির্দেশ মেনে চলেনি উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড। প্রয়োজনীয় রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরিবর্তে, ইউপিপিসিবি কেবলমাত্র নির্দিষ্ট জল পরীক্ষার ফলাফল তার সঙ্গে একটি কভার লেটার জমা দিয়েছে। ট্রাইব্যুনাল দূষণের ব্যাপারে বলেছে, কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার দ্বারা, UPPCB-এর ইনচার্জ কর্তৃক ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ প্রেরিত কভার লেটারের সঙ্গে যুক্ত নথিগুলি পর্যালোচনা করার পরেও সঙ্গমের বিভিন্ন জায়গায় গভীর মাত্রায় মল এবং মোট কলিফর্ম সনাক্ত করা গিয়েছে।

Exit mobile version