RG Kar Case: পাওয়া গেছে আরজি কর কান্ডের প্রমাণ, দাবি সিবিআই এর। কিছুদিন আগে আরজিকর (RG Kar Case) মেডিকেল হাসপাতালে ঘটে গেছে এক নারকীয় হত্যাকান্ড। সেই ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে গোটা বিশ্ব। প্রায় দু মাস অতিক্রান্ত হতে চললো কিন্তু আজও কোন সুরাহা হয়নি এই নারকীয় ঘটনার। শাস্তি দেওয়া হয়নি একজন অভিযুক্তকেও। সাধারণ মানুষ সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। প্রশ্ন উঠছে সিবিআই এর কাজ নিয়েও। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা আশার আলো দেখালো সিবিআই। সম্প্রতি শিয়ালদা কোর্টে এই মামলার স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা করা হয়েছে সিডিআই এর পক্ষ থেকে।
সিবিআই জানিয়েছে, তিলোত্তমা হত্যাকাণ্ডের সমস্ত প্রমাণ যে সত্যিই লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছিল তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই কাজের সাথে জড়িত ছিল সন্দীপ এবং অভিজিৎ। এমনটাই দাবি করছে সিবিআই। সিবিআই জানিয়েছে এদের দুজনের বিরুদ্ধে একাধিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদেরকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে আদালতের কাছে। তদন্তের স্বার্থে এইমুহুর্তে এদের জেল হেফাজতে নেওয়াই শ্রেয় বলে মনে করছে সিবিআই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সেদিন ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিল সন্দীপ এবং অভিজিৎ। উভয়ের আইনজীবি তাদের জামিনের আবেদন করেছিল আদালতের কাছে। সিবিআই তার বিরোধিতা করে অভিযুক্তদের জেল হেফাজতে নেওয়ার কথা বলেছে। এর বিপক্ষে অভিজিৎ মন্ডলের আইনজীবী প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানান অভিজিতের বিরুদ্ধে যে কয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে প্রত্যেকটি জামিনযোগ্য। তাহলে কেন জামিন দেওয়া যাবে না? সিবিআই কেন ধরে নিচ্ছে যে তার মক্কেল জামিন পাবে না? মুখ বন্ধ করা খামে কি স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে? কি প্রমাণ পাওয়া গেছে তা প্রকাশ্যে আনতে হবে সিবিআইকে। এর উত্তরে সিবিআই এর আইনজীবী জানান সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছেন তিলোত্তমা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বিস্তারিত প্রমাণ প্রকাশ্যে আনা যাবে না। অতএব মুখ বন্ধ করা খামে ঠিক কি স্ট্যাটাস জমা পড়েছে তা এই মুহূর্তে প্রকাশ্যে আসবে না তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে সিবিআইয়ের আইনজীবীর কথায়।
আদালতে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকা অবস্থায় অভিজিৎ মন্ডল জানান তাকে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। টালা থানা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ লোপাট করার কোন অভিযোগ করা হয়নি। তাহলে কিসের ভিত্তিতে তাকে আটকে রাখা হচ্ছে? এমনকি তার আইনজীবিও প্রশ্ন তুলেছেন, অভিজিৎ মন্ডলকে রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়াই গ্রেফতার করা হল কেন? অভিজিৎ মন্ডলের বিরুদ্ধে যে কয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে প্রত্যেকটি জামিনযোগ্য। তাহলে কি অপরাধে তাকে অযথা আটকে রাখা হচ্ছে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে সিবিআই এর কাছে।
সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত যেটুকু তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয়েছে তা থেকে জানা গেছে, ৯ই আগস্ট অর্থাৎ যেদিন আরজি করে (RG Kar Case) নির্মম অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছিল এক কর্মরত তরুণী চিকিৎসককে, সেদিন সন্দীপ এবং অভিজিতের মধ্যে একাধিক ফোনালাপ হয়েছে। তার কল লিস্ট প্রকাশ্যে এনেছে সিবিআই। সেই ফোনালাপ থেকে উঠে এসেছে একাধিক নামকরা চিকিৎসকদের নাম। তাদের ভূমিকা এই ঘটনার ক্ষেত্রে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল। সিবিআই জানিয়েছে যে, সমস্ত প্রমাণ লোপাট হয়ে গেছে সেগুলিকে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে কল রেকর্ডিং এর উপর ভিত্তি করে একাধিক চিকিৎসককে জেরা করার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত ঠিক পথে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া গেলে খুব শীঘ্রই এই ঘটনার সুরাহা করা সম্ভব হবে। তাই অন্তত ১৪ দিনের জন্য সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মন্ডলকে জেল হেফাজতে রাখার আবেদন জানানো হয়েছে আদালতের কাছে।