Antpur Trip: শহরের কোলাহল আর যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি কাটাতে চাইলে আঁটপুর (Antpur Trip) হতে পারে আপনার পরবর্তী সেরা গন্তব্য। পুজোর ছুটিতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন প্রকৃতি আর ঐতিহ্যের অঙ্গনে, যেখানে ইতিহাসের পদচিহ্ন খুঁজে পাবেন প্রতিটি কোণায়। হুগলির আঁটপুর শুধু প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর পরিবেশ নয়, বরং রামকৃষ্ণ পরমহংসের শিষ্যদের সঙ্গে জড়িত মহিমান্বিত স্মৃতিবিজড়িত স্থানও। মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যেতে পারেন এই শান্ত গ্রামে, যা আপনাকে নিয়ে যাবে সময়ের অলিতে-গলিতে।
সন্ন্যাসীদের সঙ্কল্প ও ধুনি মণ্ডপের মহিমা
আঁটপুর শুধু একটি গ্রাম নয়, এটি রামকৃষ্ণ পরমহংসের নয় শিষ্যের একত্রে সংসার ত্যাগের সঙ্কল্পের স্মৃতি ধারণ করে রেখেছে। ধুনি মণ্ডপ, যেখানে তাঁরা সন্ন্যাস গ্রহণের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তা আজও স্বামী বিবেকানন্দ ও তাঁর সঙ্গীদের খোদাই করা মূর্তির মাধ্যমে সেই মহান অধ্যায়ের সাক্ষ্য দেয়। এখানে এলে (Antpur Trip) এই পবিত্র স্থান ঘুরে দেখা যেন আবশ্যক।
টেরাকোটার অপূর্ব মন্দিরসমূহ: স্থাপত্যের রত্ন
আঁটপুরে প্রবেশ করলেই আপনার চোখে পড়বে একাধিক প্রাচীন মন্দির, যা টেরাকোটার নকশার জন্য বিখ্যাত। এর মধ্যে রাধাগোবিন্দ মন্দির বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৭৮৬ সালে বর্ধমান রাজের দেওয়ান কৃষ্ণরাম মিত্র গঙ্গার মাটি দিয়ে এই অপূর্ব মন্দিরটি নির্মাণ করেন। মন্দিরের টেরাকোটার প্যানেলগুলোতে পৌরাণিক কাহিনী এবং সামাজিক জীবনের রূপায়ণ মনোমুগ্ধকর। এর পাশেই রাসমঞ্চ এবং দোলমঞ্চ আপনাকে মুগ্ধ করবে স্থাপত্যের বিশদ সূক্ষ্মতায়।
আরো পড়ুন: ক্রমাগত বদলাচ্ছে গঙ্গার গতিপথ, চিন্তায় বন্দর কর্তারা
প্রেমানন্দ ভবন: সন্ন্যাসীদের সাধনার কেন্দ্র
রামকৃষ্ণ মঠের উদ্যোগে সংরক্ষিত ‘প্রেমানন্দ ভবন’ হলো সেই স্থান, যেখানে বাবুরাম ঘোষসহ নয় শিষ্য সন্ন্যাস গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এটি শুধু ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এখানে প্রতি বছর দুর্গাপূজাও হয়। পুজোর সময় আঁটপুর ভ্রমণে (Antpur Trip) এলে আপনি গ্রাম্য পরিবেশে দুর্গাপূজার মনোমুগ্ধকর আয়োজন উপভোগ করতে পারবেন।
কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, আর কী দেখবেন?
কলকাতা থেকে আঁটপুরের দূরত্ব প্রায় ৫২ কিমি। ডানকুনি হয়ে গাড়িতে মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যেতে পারেন। এখানে থেকে যেতে চাইলে আঁটপুর রামকৃষ্ণ মঠের অতিথি নিবাসে রাত্রিবাসের সুযোগ রয়েছে। আঁটপুরের বিখ্যাত তাঁত শিল্পও দেখা যাবে, যেখানে আপনি নিজ চোখে তাঁতের শাড়ি বোনার শিল্প উপভোগ করতে পারবেন। আরও দেখতে পারবেন রাজবলহাটের মৃন্ময়ী মন্দির এবং কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মস্থান। আঁটপুরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা ইতিহাস আর প্রাচীন মন্দিরের নিদর্শনগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবেই।