সমস্যার সমাধান নিয়ন্ত্রণ এনে শুরু হয়েছিল দেউচা-পাচামির কয়লা খনির খননকার্য। কিন্তু জটিলতা কাটলো না বরং আবারো শুরু হলো চরম বিক্ষোভ। বিক্ষোভ এতটাই তীব্র হলো যে প্রশাসনিককে বন্ধ করে দিতে হলো দেউচা-পাচামির খননকার্য। জমি থেকে তুলে দেওয়া হল জেসিপি, পে লোডার খননকার্যের যাবতীয় জিনিস। কিন্তু কেন এই জটিলতা? কি কারণে সরকারের এই উদ্যোগে বাধা দিচ্ছে গ্রামবাসীরা?
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে দেউচা-পাচামিতে খননকার্য প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়। কারণ এই এলাকার ৩,৪০০ একর জমি জুড়ে প্রচুর কয়লা মজুত করা রয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম কয়লা খনি বলা যায় এই এলাকাকে। যেখানে রয়েছে প্রায় ১২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা। যার উপরে রয়েছে ৬৭৫ মিলিয়ন টন ব্যাসল্ট। এই এলাকা জুড়ে ২০টি গ্রামে বসবাস রয়েছে ২১ হাজার মানুষের। আর এই গ্রামবাসীদের জমিতে খননকার্য বাস্তবায়ন করতে গিয়েই সমস্যার সম্মুখীন হন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
কিন্তু কি কারণে প্রশাসনিককে বারংবার বাধা দিয়ে বিক্ষোভ করছেন গ্রামবাসীরা? সূত্র মারফতে জানা গিয়েছে গত ৫ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে দেউচা-পাচামিতে খননকার্য প্রকল্পের বাস্তবায়নের কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। যে খননকার্যের জন্য সরকার তরফে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। শুধু তাই না, সেখানকার মানুষদের জন্য বেশ কিছু প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন রাজ্যের মাননীয়া।
আরও পড়ুন: আবারো ভোগান্তির শিকার ট্রেন যাত্রীরা, বাতিল হল খড়্গপুর ডিভিশনের একাধিক ট্রেন, কেন?
খননকার্যের পূর্বে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেউচা-পাচামির স্থানীয়দের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন যে, যে গ্রামবাসীদের জমির উপরে এই খনন কার্য করা হবে সেই জমিদাতাদের একাধিক সুবিধা প্রদান করবে রাজ্য সরকার। সরকারি চাকরি, ক্ষতিপূরণ সহ আর্থিক প্যাকেজ দেওয়ার কথা দিয়েছিলেন রাজ্যের মাননীয়া। যার ফলে জমিদাতারা তাদের জমি বিক্রি করলে কোনো সমস্যা পড়তে হবে না জমিদাতাদের। তাহলে কেন চড়াও হলেন গ্রামবাসীরা?
দেউচা-পাচামিতে খননকার্য না করতে দেওয়ার স্থানীয়দের প্রধান কারণ হলো প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ। ওই এলাকার গ্রামবাসীদের অভিযোগ রাজ্যের মাননীয়া কথা দিয়ে কথা রাখেনি। বিক্ষোভকারী মহিলাদের দাবি, তারা তাদের জমি ছাড়বে না। তারা খনি চায় না। কারণ তাদের থেকে জমি নিয়ে নেওয়া হলে তাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ কি হবে? প্রশ্ন তুলে জমি ছাড়বে না বলে বিক্ষোভ করেন গ্রামবাসীরা। চরম বিক্ষোভ করে খনিতে নেমে খনন কার্যের সমস্ত জিনিসপত্র তুলে কাজ বন্ধ করে দেয় মহিলারা। যার ফলে খনন কার্য থেকে পিছু হটলেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।