খাদ্যরসিক বাঙালিদের খাবারের জুড়িমেলা ভার। নিরামিষ বা উপোসের দিনেও তারা নানান ধরনের খাবারের ভান্ডার গড়ে তোলে। আর তেমনি একটি খাবার হল সাবুদানা। যা সাগু নামেও পরিচিত। পূজা-অর্চনার দিন অনেকেই এই সাবুদানা ভিজিয়ে বা সাবুদানা দিয়ে নানান পদ রান্না করে খেয়ে উপোস ভাঙেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না এই সাবুদানা কোন গাছ থেকে কি পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। আজকের এই প্রতিবেদনে অবশ্যই জেনে নিন সাবুদানা তৈরীর পদ্ধতি সহ বিশেষত্ব।
সাবু বা সাবুদানা হলো একটি কার্বোহাইড্রেট ও স্টার্চে ভরপুর খাবার। বর্তমানে দেখা না গেলেও পূর্বে রোগী থেকে শুরু করে শিশুদের খাবারের তালিকায় থাকতো এই সাবুদানা। শুধু তাই না, এই সাবুদানা দিয়ে নানা রকম পদও তৈরি করা হয়। সুজি, হালুয়া, সাবুর খিচুড়ি যা খেতে বেশ সুস্বাদু হয়। তবে এই সাবুদানা সরাসরি প্রকৃতি থেকে পাওয়া যায় না। বরং সাবু তৈরীর উপাদান প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করে তা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়।
বিশেষত সাবুদানা তৈরি করা হয় গাছের শিকড় থেকে। টেপিওকা নামক এক পূর্ণবয়স্ক গাছের কন্দ থেকে এই সাবুদানা তৈরি করা হয়। তার জন্য প্রথমে একটি পূর্ণ টেপিওকা গাছ কাটা হয়। তারপর সেই গাছের মূল সংগ্রহ করে তা ভালো করে থেঁতো করা হয়। এরপর থেঁতো করা মূলকে ভালো করে মেখে একটি আঠালো ময়দার মিশ্রণ হিসেবে গড়ে তোলা হয়। যা বারবার জলে ধুয়ে মিশ্রণ থেকে স্টার্চ বা মাড় পদার্থটিকে আলাদা করা হয়।
আরও পড়ুন: বসন্ত পঞ্চমীর আগেই অন্ত যাবেন শনিদেব, ভাগ্য ঘুরবে এই ৩ রাশির
এরপর কন্দের আঠালো মিশ্রণ থেকে আলাদা করা স্টার্চকে ভালো করে জাল দেওয়া হয় যাতে ভালো করে জমাটা বাঁধে। পরবর্তীতে স্টার্চ শক্তভাবে জমাট বাঁধলে তা মেশিনের মাধ্যমে ছোট ছোট গোল গোল আকারে কেটে নেওয়া হয়। সর্বশেষে এই গোল গোল আকারে কেটে নেওয়া দানাগুলোকে রোদে শুকিয়ে নেওয়া হয়। তাহলেই তৈরি হয়ে যায় সাবুদানা।
এই সাবুদানা খেলে শরীরে নানান উপকারিতা পাওয়া যায়। শরীরের ওজন কমানোতে সহায়তা করে। পাশাপাশি হজম শক্তি বৃদ্ধি, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সাবু খেলে হাড় মজবুত হয়। স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুলের বৃদ্ধি ঘটে, অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। শরীরে ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশেষত দুধ বা জলে ভিজিয়ে খেলে সাবু থেকে নানান উপকারিতা পাওয়া যায়।