Janata Meal: খাবারের যে তালিকা দেখা যাচ্ছে তা কিন্তু মন্দ নয়। ঈদের পেটে যদি সস্তায় এই ধরনের খাবার পাওয়া যায় তাহলে সোনায় সোহাগা। মেনুতে থাকছে সাত পিস গরম গরম কচুরি (১৭৫ গ্রাম), আলু-সব্জি ১৫০ গ্রাম, আচার ১৫ গ্রাম, এক পিস লঙ্কা। নিশ্চয়ই ভাবছেন এত কিছুর জন্য হয়তো দিতে হবে অনেক টাকা, তা কিন্তু একেবারেই নয়। মাত্র পনেরো টাকায় এই ধরনের খাবার পাওয়া যাবে রাজ্যের একটি বড় স্টেশনে। স্টেশন মানেই সেখানে প্রত্যেকদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের যাতায়াত এবং স্বাভাবিকভাবেই সেখানে খাবারের স্টলে যদি সস্তায় খাবার পাওয়া যায় তাহলে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে দরিদ্র মানুষ সকলেরই সুবিধা হয়। নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করছে কোথায় পাওয়া যাচ্ছে এই সুস্বাদু খাবার?
শিয়ালদহ স্টেশনের জনতা মিল (Janata Meal)
পেট ভর্তি করা খাবার পাওয়া যাচ্ছে রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন শিয়ালদহতে। শিয়ালদহ রেল স্টেশনের ‘জন আহার’ স্টলে যাত্রীদের জন্য সস্তায় এই মেনু চালু হয়েছে। ১৫ টাকার এই ‘প্যাকেজ’-এর পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘জনতা মিল’ (Janata Meal)। শিয়ালদহ স্টেশন কিন্তু দেশের অন্যতম ব্যস্ত একটি স্টেশন, যেখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় দেখা যায়। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বিভিন্ন শাখার ট্রেন চলাচল করে তাই এখানকার যাত্রী সংখ্যাও প্রচুর। এই শিয়ালদহ স্টেশনের সাউথ সেকশনের দিকে যাওয়ার পথেই পড়ে ‘জন আহার’ স্টল। সাধারণ মানুষের কাছে সস্তায় এত ভাল খাবার পাওয়াটা সত্যিই অনেক বড় ব্যাপার।
আমজনতার মুশকিল আসান এই জনতা মিল (Janata Meal)
শিয়ালদহ স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ থেকে ১৮ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। আশা করি সকলেই জানেন যে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে যদি পশ্চিমবঙ্গের তুলনা করা যায় তাহলে এখানকার খরচ অপেক্ষাকৃত অনেকটাই কম। সেই জীবনযাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারতীয় রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের এই ‘জনতা মিল’ (Janata Meal) আমজনতার প্রশংসা ও সমাদর আদায় করবে এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
বাঙালি ও অবাঙালির পছন্দমত খাবার
কচুরি হল এমন একটা খাবার যা বাঙালি-আবাঙালি নির্বিশেষে সবারই বেশ পছন্দের। শিয়ালদহ স্টেশনের মতো ব্যস্ত এবং জনবহুল ষ্টেশনে যদি ১৫ টাকায় (Janata Meal) এত ভালো খাবার পাওয়া যায় তাহলে অনেকেরই সুবিধা হয়। চটজলদি সস্তায় এই ধরনের খাবার সচরাচর পাওয়া যায় না। ব্যস্ততার মধ্যে সাধারণ মানুষ অনায়াসে খেতে পারবে এই খাবার। সেই সঙ্গে ‘জন আহার’-এ মিলছে বিরিয়ানি, সাউথ ও নর্থ ইন্ডিয়ান হরেক খাবার। বাজারের দামের তুলনায় এখানে অনেক সস্তায় সাধারণ মানুষ পেয়ে যাবে এই ধরনের খাবার।
আরও পড়ুন: রাজ্যে কবে শুরু গরমের ছুটি? পড়ুয়া এবং শিক্ষার্থীদের জন্য এলো কোন নতুন নির্দেশ?
মূল্যবৃদ্ধির বাজারে কিভাবে সম্ভব হচ্ছে এই উদ্যোগ (Janata Meal) নেওয়া?
বর্তমানে বাজারে জিনিসের যা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে এত সস্তায় আমজনতাকে ভালো খাবার খাওয়ানো সত্যিই অসম্ভব। তাহলে কিভাবে জনতা মিল (Janata Meal) এত সস্তায় দেওয়া হচ্ছে? জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ ডিভিশনের তরফে স্টেশন চত্বরে এই ধরনের স্টল খোলার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়। যে সংস্থা এই স্টল দেবার টেন্ডার পায় তাকে টাকা গচ্ছিত রাখতে হয় রেলের কাছে। ‘জন আহার’ স্টলের জন্য এই ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’-এর পরিমাণ অনেকটাই কম রেখেছে শিয়ালদহ ডিভিশন। বলা যেতে পারে সাধারন মানুষকে ঘুরপথে আর্থিক সহায়তা করছে ভারতীয় রেল। যাত্রীদের জন্য উন্নতমানের এবং সস্তার খাবার রাখতে পেরে নিশ্চিন্ত হতে পারে রেল কর্তৃপক্ষ।
যাত্রীদের জন্য চালু হয়েছে জন আহার
শিয়ালদহ ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার (ডিসিএম) যশরাম মিনা বলেন, যাত্রীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করেই চালু করা হয়েছে জন আহার। এখানে খাবারের গুণমানের সঙ্গে কোনরকম আপোস করা হয় না। নজরদারি রাখার জন্য এই স্টলে কর্মাশিয়াল বিভাগের তরফে সারপ্রাইজ ভিজিট করা হয়। আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বহু যাত্রী নির্দিষ্ট দিনে আমিষ-নিরামিষ ভেদে খাবার খান। সেই কথা মাথায় রেখে এই অভিনব উদ্যোগ চালু হয়েছে শেয়ালদহ স্টেশনে। শিয়ালদহ ‘জন আহার’-এ সাধারণ যাত্রীরা নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন। আমিষ ও নিরামিষ খাবারের বাসন সম্পূর্ণ পৃথক রাখা হয় এই জায়গায়। যশরাম মিনার মস্তিষ্কপ্রসূত এই ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে শিয়ালদহ স্টেশনে।