Site icon লোকাল সংবাদ

দারিদ্রকে সঙ্গী করে জীবন যুদ্ধে লড়েছেন মহাকাশবিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায়

গৌতম চট্টোপাধ্যায়

প্রতিনিধত্বমুলক

গৌতম চট্টোপাধ্যায় হলো বাঙালি সমাজের কাছে গর্ব। তার কাহিনী অনুপ্রেরণা যোগাবে বহু মানুষকে। তার জীবন যুদ্ধের কাহিনী অবাক করার মত। কিভাবে নবগ্রাম থেকে NASA-র একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠলেন তিনি? পেটে ছিল খিদে, হ্যারিকেনের আলোতে পড়াশোনা করে বিশ্বজয় করেছেন এই বাঙালি। সিনেমা কিংবা সিরিয়ালের প্লটকে হার মানিয়ে দেবে তার জীবনের কাহিনী। নাসার বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায় সবার কাছে গর্বের নাম।

গৌতম চট্টোপাধ্যায় হলেন হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দা। তিনি পড়াশোনা করেছেন নবগ্রাম বিদ্যাপীঠ থেকে। সম্প্রতি তিনি ডাক পেয়েছেন নাসার তরফ থেকে। তাকে ‘পিপল লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে। তার পরিবার এই নিয়ে যথেষ্ট গর্বিত। কিন্তু নাসায় পৌঁছানোর এই যাত্রা তার পক্ষে মোটেও সহজ ছিল না। নানা রকম বাধা পেরোতে হয়েছে তাকে।

তবে মনে যদি থাকে অদম্য জেদ ও সাহস তাহলে সব বাধাই অতিক্রম করা যায়। নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি বহু কষ্ট করেছেন। নাসার বিশিষ্ট বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায় প্রমাণ করে দিয়েছেন যে তিনি কতটা মেধাবী। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে আমেরিকায় থাকেন। স্ত্রী, মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। এক চিলতে ঘর থেকে নাসায় পৌঁছানোর এই যাত্রা চিরস্মরণীয় তার জীবনে। তার মা থাকেন কোন্নগরের এক আবাসনে। নাসার মতো জায়গায় কাজ করলে কী হবে, নিজের শিকড় ভোলেননি। সময় পেলেই চলে আসেন নিজের বাড়িতে।

আরও পড়ুন: বয়স ৮০, মুখে সর্বদা হাসি, আড়াই টাকাতে সিঙ্গারা খাওয়াচ্ছেন সিঙ্গারা দিদা

একটি সাক্ষাৎকারে গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান, যখন তিনি নবম শ্রেণীতে পড়তেন তখনও তাদের বাড়িতে কোন বিদ্যুৎ ছিল না। হ্যারিকেনের আলোয় পড়াশোনা করতেন তিনি। তিনি নাসায় কাজ করছেন প্রায় ১২ বছর হয়ে গেছে। গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান, বড় হওয়ার স্বপ্ন তিনি সবসময় দেখবেন। বাড়িতে কোনো নিউজ পেপার আসতো না সেই কারণে তিনি নাকি কাছাকাছি ক্লাবে গিয়ে পড়ে ফেলতেন আনন্দবাজার পত্রিকা ও স্টেটসম্যান। বিজ্ঞানের খবরগুলি তার সবসময়ের পছন্দের। নাসার বিজ্ঞানীদের গবেষণা, আবিষ্কারের কথা পড়তে তার খুবই ভালো লাগতো , ভাবতেন যদি তিনিও হতে পারতেন তাহলে কী না ভালো হত। জীবনের সবথেকে বড় বাধা ছিল আর্থিক অনটন।

তিনি আরো বলেন, দুই-সেট বই কেনার ক্ষমতা ছিল না বলে, ছোট ভাইকেও বাবা-মা ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে একই ক্লাসে। একইসাথে পড়াশোনা করতে করতে এগিয়ে চলা। মহাকাশ বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, বাবা মা চিরকালই বলে এসেছিল আর্থিক অবস্থা খারাপ তাই এর থেকে বেরোনোর একমাত্র উপায় ভালোভাবে পড়াশোনা করা। পড়াশোনা বা অধ্যাবসায়ের কোনও বিকল্প হয় না। বিজ্ঞানীরা মোট ছয় ভাইবোন সেই কথাই মেনে এসেছে। তারপর তিনি শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ক্যালিফর্নিয়া টেকনোলজি কলেজে যান। এরপর সবটাই যেন স্বপ্ন।

Exit mobile version