Khan Sir: বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রার্থীদের সাথে পথে নেমে বিক্ষোভ করার জন্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন শিক্ষাবিদ ইউটউবার খান স্যার (Khan Sir)। কয়েক ঘণ্টা পর শুক্রবার পাটনার এক থানা থেকে মুক্তিও পেয়ে যান তিনি। এই খবর সামনে আসতেই হৈচৈ পড়েছে দেশ জুড়ে তবে বিহার পুলিশ বিষয়টিকে গুজব বলে দাবি করেছেন। পরীক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবি ছিল ওয়ান শিফট ওয়ান পেপার থিওরি। অর্থাৎ একটা শিফটে একটাই প্রশ্নপত্র ব্যবহার করে পরীক্ষা নিতে হবে।
সেই বিক্ষোভে নিজের ছাত্রছাত্রীদের পাশে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল খান স্যারকে (Khan Sir)। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতেই সেখানে পৌঁছান পাটনার স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এমএস খান। তিনি বিক্ষোভ থামানোর আবেদন করেন বলে জানা যায়। এরপর খান স্যার সংবাদমাধ্যমে জানান বিক্ষোভটি রাজনৈতিক নয় পরীক্ষার্থীদের দাবি মেটাতে সক্ষম মানুষদের সাথে বৈঠকে বসবেন তাঁরা। তিনি আরো জানান এই প্রতিবাদ সংবিধানের বাইরে নয় তাই পুলিশের আটকানো অনুচিত। পুলিশের সন্তানেরাও পাটনায় পড়াশুনো করবেন। তিনি জানান রাজ পথে প্রতিবাদ করা হচ্ছেনা। আইন মেনে ধর্না মঞ্চে প্রতিবাদ চলছে। একই সাথে আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করেন তিনি। জানান সার্ভারের সমস্যায় অনেকেই আবেদন সম্পুর্ণ করতে পারেননি।
এরপরই গ্রেফতার হন সকলের সম্মানের খান স্যার। গার্দানীবাগ থানা থেকে গভীর রাতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। যদিও গ্রেফতারির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিহার পুলিশ জানান গ্রেফতার করা হয়নি তাঁকে বরং স্বেচ্ছায় থানায় গিয়েছিলেন তিনি। তবে খান স্যার (Khan Sir) নিজে কিছু জানাননি। খবর সামনে আসতেই হৈচৈ পড়ে গেছে সমাজ মাধ্যমে। সকলের প্রিয় খান স্যার সম্পর্কে জানতে আগ্রহ জাগে সকলের মনে। মূলত শিক্ষকতার অভিনব কৌশলের জন্যই জনপ্রিয় তিনি। ছাত্রদের কাছে খান স্যার নামে পরিচিত হলেও আসল নান ফয়জাল খান। উত্তরপ্রদেশের গরক্ষপুর এলাকার বাসিন্দা তিনি। কিছু বছর নিজের নাম প্রকাশ্যে আনেননি এই শিক্ষক জানা যায় খান স্যারের কোচিংয়ের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কঠোর ভাবে নির্দেশ দেওয়া হয় যেনো কোনো ভাবেই তাঁর আসল নাম প্রকাশ্যে না আনা হয়।
আরো পড়ুন: ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে মরিয়া আফগানরা, কলকাতা পুরসভাকে নোটিশ দিলো CBI
তাঁর অভিনব পড়ানোর পদ্ধতিতেই শিক্ষার্থীদের মন জয় করে নিয়েছে। নাম নিয়ে খুব একটা আগ্রহ তাই দেখা যায়নি। ফলে খান স্যার নামেই অর্জন করেছেন খ্যাতি। টনা অঞ্চলে খান জিএস রিসার্চ সেন্টার (Khan GS Research Centre) নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালান তিনি। ইউটিউবে ভাগ করে নেন নিজের পড়ানোর ভিডিও। পড়ানোর কৌশলের জন্য পাটনা ছাড়াও গোটা দেশে বিখ্যাত এই খান স্যার (Khan Sir)। বর্তমানে তার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২ কোটি ২৯ লক্ষেরও বেশি। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান। জানা যায় তাঁর বাবা একজন সেনা কর্তা ছিলেন মা গৃহবধূ। এছাড়াও তাঁর এক দাদা সেনাবাহিনীর কমান্ডো। ছোট থেকেই পড়াশুনায় আগ্রহী খান স্যার (Khan Sir) NDA পরীক্ষায় পাশ করে নির্বাচিত হননি।
গত বছর দ্যা কপিল শর্মা শো-তে হাজির হন তিনি। সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থীর দুরবস্থার কোথায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে দেখা যায় কপিল শর্মাকেও। রেলের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ২০২২ সালের শুরুতে আগুন জ্বলে উঠেছিল বিহারে। ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া, রেলের সম্পত্তি ভাংচুর করার মতো ঘটনার সাক্ষী থাকে গোটা দেশ। সেই সময় মদত যোগানোর অভিযোগ ওঠে খান স্যারের (Khan Sir) বিরূদ্ধে। আটক হওয়া পরীক্ষার্থীদের বয়ানে ভর করে একটি FIR ও দায়ের হয়। তবে পরে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান তিনি হিংসা সৃষ্টি করলে অবশ্যই গ্রেফতার করা উচিত। তবে এর জন্য দায়ী ভারতীয় রেলের বোর্ড-ই।