নয়া নিয়ম চালু করল কলকাতা পুরসভা, ছোট জমির ক্ষেত্রে এলো নতুন সিদ্ধান্ত

কলকাতার কলোনী এলাকা থেকে শুরু করে বস্তি অঞ্চল এবং অন্যান্য বিভিন্ন জায়গায় বহু ছোট ছোট জমি রয়েছে। কারও আছে সাকুল্যে এক কাঠা জমি, আবার কারও ভাগে পড়েছে তার চেয়েও কম। এত ছোট জায়গায় বাড়ি করতে হলে কোনভাবেই কলকাতা পুরসভার যাবতীয় নির্মাণবিধিকে মান্যতা দেওয়া সম্ভব নয়। অল্প জমিতে নিয়ম মেনে বাড়ি তোলা কার্যত অসম্ভব। কিন্তু আইনে রয়েছে, বাড়ি তৈরি করতে হলে জমির চারদিকে অন্তত ৪ ফুট করে ছাড় (ওপেন স্পেস) দিতেই হবে।তাহলে কিভাবে সম্ভব নির্মাণকাজ?

এইধরনের ছোট জমির ক্ষেত্রে যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ ছাড় দিতে হয় তাহলে বাড়ি করার জন্য তেমন জায়গা বাঁচবে না। যারফলে পুর-অনুমোদন ছাড়া অবশেষে অবৈধ নির্মাণ তুলতে হয়।অনেক সময় দেখা যায় যাবতীয় নিয়ম মানতে গেলে নিম্নবিত্ত মানুষের নিজস্ব একটি ঘরের স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। একদিকে যেমন রয়েছে অবৈধ নির্মাণে রাশ টানা, পাশাপাশি গরিব মানুষকে কিছুটা সুরাহা দিতে ছাড়ের নিয়মে কিছু শিথিলতা আনার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা।

তবে ভাববেন না এই নিয়ম চালু হবে সর্বত্র? শুধুমাত্র শহরের কলোনি, ঠিকা বা বস্তি এলাকার জন্য এই নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে যে, সব পুরসভাতেই আগামী দিনে চালু হয়ে যাবে এই নতুন নিয়ম। পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর ইতিমধ্যেই তার খসড়া তৈরির কাজ শুরুও করে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: কলকাতা মেট্রোর কিছু স্টেশনে থাকছে না টিকিট কাউন্টার! কীভাবে কাটবেন টিকিট?

শুক্রবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, কলকাতা পুরসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মানবিক দিক বিবেচনা করেই। যদিও এই কমিটি ছোট জমিতে কোথায়, কতটা ছাড় দেওয়া যায়, সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে। তাদের প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছে মেয়র পরিষদ। এবার থেকে কলোনি, ঠিকা বা বস্তি এলাকার ছোট জমিতে কম ছাড় দিয়ে বাড়ি তৈরি হবে তাও আবার বৈধভাবেই। এই প্রসঙ্গে মেয়র বলেছেন, এই ধরনের জমিতে অবৈধ নির্মাণের রেগুলারাইজেশন বা বৈধকরণ বাবদ নেওয়া জরিমানার টাকাও কমানো হয়েছে। এইসব কারণে এতদিন পর্যন্ত ৩ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা নেওয়া হতো, তবে এবার তা কমে দাঁড়াচ্ছে ৪২ হাজার টাকা।

রাজ্যের কাছে এই ছাড় কমানোর জন্য আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনের প্রস্তাব অনেক আগেই পাঠানো হয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত চূড়ান্ত হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত মেয়র পরিষদের বিশেষ ক্ষমতাবলে এই ছাড় দেওয়া হচ্ছে।পুর কমিশনার বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই নির্দেশিকা জারি করবেন। এখন থেকে শহরের সমস্ত নির্মীয়মাণ ভবনের গায়ে ওই নির্মাণ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য যেমন – মালিক, প্রোমোটার বা ডেভেলপারের নাম, ঠিকানা, প্রেমিসেস নম্বর, ক’টি তল, আয়তন ইত্যাদি বিষয় বোর্ডে লিখে টাঙানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যদি কোনো কারণে এটি না থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট নির্মাণকে ‘বেআইনি’ বলে ধরে নেবে কলকাতা পুরসভা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *