বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ভর্তির মেধা তালিকা ঘিরে ধুমধুমার। গত বছরের মে মাসে শুরু হয় আবেদন প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সামনে আসে ভর্তির প্যানেল। এর তাতে অন্যান্য সব সংরক্ষণের কোটাগুলি থাকলেও ছিলনা ওবিসি এ কোঠা। ওবিসি সম্প্রদায়কে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা হয় এ এবং বি। এক্ষেত্রে এ বলতে মুসলিম এবং বি বলতে হিন্দু সম্প্রদায়কে বোঝানো হয়। সেক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য সংরক্ষিত কোটার ছাত্র ছাত্রীদের পিএইচডি কোর্সে ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও বঞ্চিত করা হয় ওবিসি এ কোটার ছাত্র-ছাত্রীদের।
এই বৈষম্য নিয়ে বারংবার প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা মহলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে শিক্ষার বিকাশ হয়েছে এই সম্প্রদায়েও, তবে কেনো এই দ্বিচারিতা? এই প্রশ্ন করা হলে এক আধিকারিক জানান ওবিসি নিয়ে বর্তমানে হাই কোর্টে কেস চলছে। ফলে এই অমীমাংসিত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায়না কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই জন্যই বন্ধ রাখা হয়েছে এই বিশেষ সংরক্ষিত শ্রেণীর ভর্তি।
ঘটনাটি ঘটেছে কল্যানী ইউনিভার্সিটিতে। এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল অফিসারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রথমে ঘটনাটি অস্বীকার করেন পরে মেরিট লিস্ট দেখে স্বীকার করেন যে ওবিসি বি শ্রেণীর কোটায় ভর্তি হলেও ওবিসি এ বঞ্চিত হয়েছে। শুধুমাত্র ওবিসি এ কোটার উপর এই অবিচার কেনো জানতে চাইলে তিনি জানান ফাইল দেখে জানাতে হবে এবং তিনি এখন বিশেষ কিছু বলতে চান না এই বিষয়ে। এদিকে কল্যানী ইউনিভার্সিটির আরেকজন আধিকারিক বলেন সব দিক বিবেচনা করে ১১ জন প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয় সেখানে পিএইচডি পড়ার জন্য বেছে নেওয়া হয় ১০ জনকে। সেখানে একজন ওবিসি এ ক্যান্ডিডেটও ছিলেন বলে খবর। তবে কেনো ওবিসি এ ক্যাটাগরির উপর এত তোপ সেই উত্তর এখনও অধরা।
আরও পড়ুন: সই জাল করে জামিন একাধিক দাগি অপরাধীদের, পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন
ছাত্র ছাত্রীরা চিঠি দিয়ে কল্যানী ইউনিভার্সিটি উপাচার্যকে বিষয়টি জানালে কোনো সদুত্তর মেলেনি। পরে আবারো বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি দেয় ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের দাবি ছিল ওবিসি এ-কে রেখেই প্রকাশ করতে হবে মেধা তালিকা। এর উত্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয় যে সুপ্রিম কোর্টের রায় ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবেনা। এরপর আবারও কল্যানী ইউনিভার্সিটির তরফে পিএইচডি ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পাওয়ায় আবারও পড়ুয়ারা চিঠি দেন উপাচার্যকে। তবে এখনো অধরা সদুত্তর।
এদিকে শিক্ষা মহলে প্রশ্ন উঠছে কেনো বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সদুত্তর দেওয়া হচ্ছেনা। কারণ হাইকোর্ট পরিষ্কার জানিয়েছে যে মামলার আগে পর্যন্ত যেসব প্রক্রিয়া চলছিল তা স্থগিত রাখা যাবেনা। তবে কেনো কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয় সেই সুবিধা দিতে রাজি নয় সেই বিষয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটছে না। রাজ্যের অন্যান্য সব বিশ্ব বিদ্যালয়ে এই সুবিধা থাকলেও কেনো কল্যানী ইউনিভার্সিটি অন্য পথে হাঁটছে বিষয়টি ভাবাচ্ছে শিক্ষা মহলকে।