বিশ্বের ঋণগ্রস্থ দেশগুলির তালিকা প্রকাশ করা হল। কোন কোন দেশের নাম রয়েছে এই তালিকায়? ভারতের নামই বা কত নম্বরে রয়েছে? বিস্তারিত জানতে হলে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে থাকুন। বিশ্বব্যাংক অনুযায়ী, বর্তমানে বৈশ্বিক ঋণের পরিমাণ ১০০.২ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। কোভিড মহামারীর পরই এই ঋণের পরিমাণ আরো দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিশ্ব মহামারির কারণে বিভিন্ন সরকার তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি খরচ করেছে। যার ফলে বিভিন্ন দেশগুলির ঋণের মাত্রা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর সম্ভবত এই পরিস্থিতিই বৈশ্বিক অর্থনৈতিকে আরো গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।
এই বিশ্বের ঋণগ্রস্থ দেশগুলির তালিকার প্রথম স্থানই রয়েছে আমেরিকা। আমেরিকার মোট ঋণ ৩৬ ট্রিলিয়নে পৌঁছেছে। এই পরিমাণটি মার্কিন জিডিপির প্রায় ১২৫%। অর্থাৎ পুরো বিশ্বের ঋণের এক তৃতীয়াংশ অংশই আমেরিকার। এই প্রচুর ঋণ বৃদ্ধির কারণ হল বিশাল সরকারি ব্যয় ও সামরিক বাজেট। তাই এই অতিরিক্ত ঋণের কারণে মার্কিন অর্থনীতি বড়সড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
বিশ্বের ঋণগ্রস্থ দেশগুলির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন। এক্ষেত্রে চীনের মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ১৪.৬৯ ট্রিলিয়ন ডলার। যা বৈশ্বিক ঋণের প্রায় ১৬.১%। চীনের ঋণ বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল তাদের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বৃহৎ অবকাঠামোতে বিনিয়োগ। চীন তাদের উন্নয়ন বাড়ানোর জন্য বিপুল পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করেছে। যেখানে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সরকারগুলোর বড় ভূমিকা রয়েছে। তবে চীনের অধিকাংশ ঋণ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকারগুলোর দ্বারা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাড়িতে তো নগদ অর্থ রাখছেন, জানেন বাড়িতে ঠিক কত পরিমান টাকা রাখা যায়?
এছাড়া, চীন বর্তমানে ধীরগতির প্রবৃদ্ধি, সামাজিক কল্যাণ ব্যয়ের বৃদ্ধি এবং আবাসন খাতে মন্দার মত কিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এসবের জন্য চীনের ঋণের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। আর বিশ্বের ঋণগ্রস্থ দেশগুলির তালিকায় সপ্তম স্থান অধিকার করেছে ভারত। ঋণের ব্যাপারে এই মুহূর্তে কিছুটা স্বস্তি প্রদান করেছে ভারতবর্ষ। ভারত তাদের ঋণের মাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। ভারতের ঋণ রয়েছে ৩.০৫৭ ট্রিলিয়ন ডলার। যা বৈশ্বিক ঋণের প্রায় ৩.২%। বড় বড় দেশগুলির
তুলনায় ভারতের ঋণের পরিমাণ অনেকাংশই কম। তবে ভারতের ঋণ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোভিডের সময় সরকার যে বড় অংক খরচ করেছে তাকে দায়ী করা হচ্ছে। ভারতের মোট ঋণের পরিমাণ জিডিপির ৬০ শতাংশ। এছাড়াও, অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকারি বিনিয়োগও ঋণ বৃদ্ধিতে একটা বড় ভূমিকা রেখেছে। তবে, ভারতের জন্য এই পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল।