Weight Loss Tips: বর্তমান সময়ে শরীর সম্পর্কে কম-বেশি অনেকেই সচেতন। শরীরকে ফ্লেক্সিবল এবং উজ্জ্বল রাখতে বহু মানুষ সকালে ওয়ার্ক আউট করতে বের হন। অনেকেই দেখছেন ওয়ার্ক আউট করেও তারা ফল পাচ্ছেন না। আর তার কারণ হলো খাদ্যাভাসের পরিবর্তন। আজকের এই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে ওজন কমানোর গোপন কয়েকটি টিপস (Weight Loss Tips)। যা শরীরকে যেমন তরতাজা, উজ্জ্বল রাখবে তেমনি হুহু করে কমাবে ওজন। তাই জেনে নিন গোপন কয়েকটি টিপস।
যে ধরনের খাবার খাওয়া উচিত (Weight Loss Tips)
স্বাস্থ্যকর খাবার: চর্বিযুক্ত পেট ও কোমর কমাতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। যেমন বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজি, শশা, গাজর, তরমুজ, কলা, আপেল, চিনি ও লবণহীন টাটকা জুস ইত্যাদি। যা শরীরে যেমন ওজন হ্রাস (Weight Loss Tips) করবে তেমনি শরীরকে চকচকে ও তাজা রাখবে।
ক্যালরি কম খাবার: শরীরের ওজন কমাতে দারুন কার্যকরী কম ক্যালরিযুক্ত খাবার। তাই শরীরে যত ক্যালোরি কম প্রদান করবেন শরীরের ওজন ততই হ্রাস পাবে। অর্থাৎ কেউ যদি শরীরে ২২০০ ক্যালোরি গ্রহণ করে তা থেকে যদি ১০০০ ক্যালোরি কমাতে পারে তাহলে ওজনও দ্রুত হ্রাস পাবে।
উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার: শরীরের স্থূলতা কমাতে গ্রহণ করুন উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার। যেমন সবজির মধ্যে বাঁধাকপি, ফুলকপি, লেটুস, ধনেপাতা, সবুজ শাক-সবজি, পটল, বেগুন প্রভৃতি সবজি। ফলের মধ্যে রাখতে পারেন আপেল, কলা, নাশপাতি, কমলা, তরমুজ, পেয়ারা, স্ট্রবেরি ইত্যাদি। বীজের মধ্যে কুমড়ার বীজ, তরমুজের বীজ, চিয়া সিড, শসার বীজ ওজন কমাতে বেশ সহায়ক। শস্যের মধ্যে বার্লি, জোয়ার, বাদামি চাল, ভাঙ্গা গম, ওটস, লাল চাল, কালো চাল খেলে শরীরের ওজন কমে। শুধু ওজন যে কমে তা নয় এর পাশাপাশি খাবার হজমেও সাহায্য করে। শরীরের টক্সিন দূর হয়।
ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: শরীরকে তাজা এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে গ্রহণ করুন ওমেগা ৩ ফ্যাসিডযুক্ত খাবার। তবে এটি শরীরে বেশি থাকলেও ক্ষতিকর। তাই ১:১ অনুপাতে এই ধরনের খাবার গ্রহণ করুন। এই ধরনের খাবার শরীরে প্রদাহ কমায়। যেমন সিলভার কার্প, ইলিশ, টুনা মাছ, সার্ডিন মাছ, অ্যাভোকাডো তেল ইত্যাদি।
উচ্চ প্রোটিন জাতীয় খাবার: বিজ্ঞানীদের মতে, শরীরের ওজন কমাতে, শরীরকে মজবুত রাখতে উচ্চ প্রোটিন জাতীয় খাবার বিশেষ সহায়তা করে। তাই ওজন কমাতে (Weight Loss Tips) খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন সয়াবিন, দুধ, ডিম, মুসুর ডাল, মাশরুম, মুরগির স্তন ইত্যাদি খাবার।
প্রোবায়োটিক: শারীরিক চর্বি কমাতে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করুন প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার। যেমন টক দই, এই ধরনের খাবার শরীরের চর্বি যেমন কমাতে সহায়তা করে তেমনি হজমে কার্যকরী, রক্তচাপ কমায়, ডায়াবেটিস কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও শরীরের ওজন কমাতে প্রতিদিন তিন থেকে চার লিটার জল, ২ থেকে ৩ কাপ গ্রিন টি সেবন করতে পারেন। তাহলেই দেখবেন শরীরের পরিধি, ওজন কমছে।
আরো পড়ুন: দূর হবে পুরুষ বন্ধ্যাত্ব, বাড়বে প্রজনন ক্ষমতা! খাদ্য তালিকায় যোগ করুন ৪ খাবার
যে ধরনের খাবার এড়িয়ে চলবেন (Weight Loss Tips)
উচ্চ সোডিয়াম যুক্ত খাবার: শরীরের স্থূলতা কমাতে গেলে উচ্চ সোডিয়াম যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এই ধরনের খাবারগুলি শরীরের রক্তচাপ বাড়ায়, শরীরে জল জমিয়ে রাখে, কার্ডিওভাসকুলার রোগের বৃদ্ধি ঘটে। তাই শরীরকে ঠিক রাখতে গেলে ফ্রায়েড জাতীয় কোনো খাবার, পিৎজা, আগে থেকে তৈরী রাখা খাবার যেমন বিস্কুট, চানাচুর, বোতলজাত সস ইত্যাদি খাবার ত্যাগ করতে হবে।
চিনি যুক্ত খাবার: বিজ্ঞানীদের মতানুসারে শরীরকে সুস্থ রাখতে গেলে চিনিযুক্ত খাবার ত্যাগ করতে হবে। চিনি যুক্ত খাবার শরীরে নানা ধরনের রোগের বাসা বাঁধায়। তাই শরীর তাজা ও মজবুত রাখতে চিনিযুক্ত খাবার যেমন কেক, পাউরুটি, চিনির কিউব, মিষ্টি, ময়দা, রুটি, সিরাপ, প্যাকেটজাত ফলের রস ইত্যাদি খাবার ত্যাগ করতে হবে।
বিজ্ঞানীদের মতে উপরে উল্লিখিত এই টিপসগুলির পাশাপাশি অবশ্যই শরীর চর্চা করতে হবে। তাহলেই দেখবেন দ্রুত ওজন কমছে (Weight Loss Tips)। যেমন – ওয়ার্কআউট করা, লাফ দড়ি খেলা, হাইনিস, বক্স জাম্প, জগিং প্রভৃতি শরীর চর্চা করলে দ্রুত শরীরের ওজন কমবে। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমও প্রয়োজন। সঠিক ঘুম না হলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি হয়, মানসিক চাপ বাড়ে। শরীরের ওজন কমাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম এবং ইন্টারমিটিং ফাস্টিং করতে পারেন দারুন কার্যকরী হবে। উপরে উল্লেখিত এই নিয়মগুলি মেনে চললে দেখবেন ৪ সপ্তাহে প্রায় ৬ কেজি অর্থাৎ ১২ পাউন্ড ওজন কমিয়ে ফেলেছেন। তবে সমস্ত কিছুই নির্ভর করছে আপনার খাদ্যাভাস, ব্যায়াম, ঘুম ইত্যাদির উপর। আপনি যেমন মেনে চলবেন আপনার ওজন তেমনি পরিবর্তন হবে।