North Bengal Medical College: জমছে পরিচয়হীন লাশের পাহাড়, সমস্যায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ। লাশ ঘরে উপচে পড়ছে লাশ। পরিচয়হীন এই লাশের কারণে সমস্যায় জর্জরিত উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ (North Bengal Medical College)। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে লাশ রাখার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। পুরনো লাশগুলিকে সৎকার করা না হলে, নতুন লাশ রাখা যাবে না। তাই লাশ ফিরিয়ে দিচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ। যে থানা থেকে পাঠানো হয়েছিল সেই থানাতেই ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লাশ ঘরে এত বেশি পরিমাণে পরিচয়হীন লাশ রয়েছে যে, নতুন করে কোন লাশ সেখানে রাখার জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়েই তারা আর নতুন কোন লাশ সেখানে রাখতে চাইছেন না। যে থানা থেকে সেই লাশগুলিকে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে সেই থানাতেই ফেরত দিচ্ছে। এত বেশি পরিমাণে অজ্ঞাত পরিচয় লাশগুলির দায়িত্ব নিতে অপারগ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ (North Bengal Medical College) কর্তৃপক্ষ।
মূলত ময়নাতদন্তে আসা লাশ সৎকার করার কিছু আইনি নিয়ম রয়েছে। যদি সেই লাশের পরিচয় থেকে থাকে তাহলে ময়না তদন্ত হয়ে যাওয়ার পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় সেই লাশটিকে। কিন্তু যদি সেই লাশে কোন পরিচয় না থাকে তাহলে বেশ কিছু আইনি পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে তার সৎকার করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। ময়নাতদন্তে আসার পর সেই লাশের ছবিসহ বিজ্ঞাপন দেয় পুলিশ। এরপর যদি পরিবারের কোনো সদস্য প্রমাণসহ এসে দাবি করতে পারে তাহলে তার হাতে লাশটি তুলে দেওয়া যাবে। অথবা সাত দিনের মধ্যে যদি কোন ব্যক্তি খোঁজ না করেন তাহলে সেই লাশটির সৎকার করে দেবে সরকার।
আরো পড়ুন: বাড়তে পারে তাপমাত্রা, হতে পারে বৃষ্টিপাত, বাংলায় কতটা প্রভাব ফেলতে চলেছে ফেনজল!
কিন্তু উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে (North Bengal Medical College) জমতে থাকা এই লাশের পাহাড় নিয়ে কোনরকম মাথা ব্যাথা নেই স্থানীয় থানাগুলির। লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানোর পর কিভাবে তা সৎকার করা হবে তা নিয়ে তেমন কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না স্থানীয় থানা। সেই কারণেই থানাগুলিতে লাশ ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিলিগুড়ির চারটি থানা ছাড়াও কার্শিয়াং এবং পাহাড়ি এলাকার অন্যান্য থানার লাশও ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে। এছাড়াও নকশাল বাড়ি, খড়িবাড়ি, মাটিগাড়া, ফাঁসি দেওয়া ইত্যাদি এলাকার লাশও ময়না তদন্তের জন্য এই কলেজেই পাঠানো হয়। যার কারণে প্রতিদিন একাধিক লাশ এসে জমছে লাশ ঘরে। এই লাশগুলিকে নতুন করে সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষে।
উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের (North Bengal Medical College) ফরেনসিক বিভাগীয় প্রধান রাজিব প্রসাদ জানিয়েছেন, কলেজে মোট ১৬ টি কুলার রয়েছে অথচ লাশ জমে রয়েছে ৪০এরও বেশি। ময়নাতদন্ত হয়ে যাবার পর সৎকারের বিষয়টি পুলিশের দায়িত্ব। যদি সেই দায়িত্ব পুলিশ পালন না করে তাহলে এত লাশ কোথায় রাখা হবে? সেই কারণেই স্থানীয় থানাদেরকে জানানো হয়েছে ময়নাতদন্তের পর লাশ ফেরত নিয়ে যান। অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে রাখুন। লাশ সৎকারের আইনি প্রক্রিয়া চালু করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল থানাগুলিতে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু লাশের সৎকার নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। খুব শীঘ্রই হয়তো এই সমস্যার সমাধান করা যাবে।