White Kali Maa: মা কালীর পদতলে মহাদেব অন্যান্য বৈশিষ্ট্যও হুবহু মিল। গায়ের রং কালো বা নীল নয় একেবারে সাদা। মা পুজো নেন শ্বেতকালী রূপে। বাংলার একাধিক জায়গায় পুজো হয় এই দেবী প্রতিমার। শায়িত মহেশ্বরের বুকের উপর দাঁড়িয়ে আছেন চতুর্ভূজা দেবী। দেবীর জিভের রং এখানে ঘোর কালো। এই রূপেই রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পুজো নেন দেবী। সাধারণত দীপান্বিতা অমাবস্যায় মণ্ডপে মণ্ডপে মা কালীর আরাধনা (Kalipuja 2024) করা হয়ে থাকে যার মধ্যে সব প্রায় জায়গাতেই নজরে আসেন শ্যামাকালী। এখনো হয়তো এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা দেবী কালীর এই ফর্সা রূপ দেখেননি।
অবাক করা কথা হুলো এই বাংলাতেই আরাধনা হয় শ্বেতকালীর (White Kali Maa)। মূর্তি একটু আলাদা হলেও তন্ত্রের দেবী হিসেবে শাক্ত মতে পূজা হয়। কোথাও কোথাও এখনও বলি প্রথার চল রয়েছে। ভোগ হিসেবে মাকে নিবেদন করা হয় আমিষ পদ। তবে কালী পুজোর নিয়মের সাথে নেই বিশেষ তফাৎ-ও। দেবীর গায়ের রঙের পার্থক্যটি খালি দৃশ্যমান।
বাংলার শ্বেতকালী (White Kali Maa) পুজোর শীর্ষে রয়েছে হুগলির রাজবলহাটের মা রাজবল্লোভি। এই দেবী দ্বীভূজা এক হাতে ছুরি অন্যহাতে রক্তে ভরা পাত্র। এখানে দেবীর পায়ের তলায় মহাদেব কালভৈরব এবং বিরুপক্ষ রূপে থাকেন। দেবীর দুই পা এই দুই রুপার বুকের উপরে রাখেন। ত্রিনয়না দেবীকে দেওয়া হয় মাছের ভোগ! দেবীর পরণের শাড়ি ভক্তরাই দিয়ে যান পুজো হিসেবে। দেবীর গলাতেও রয়েছে মুণ্ডমালা। কালীপূজোতে তিথি মেনে দেওয়া হয় বিশেষ পুজো। আরও কয়েক জায়গার পাশাপাশি চেতলাতে একটি মন্দিরেও পুজো হয় মা রাজবল্লভীর।
আরো পড়ুন: ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতবাণী, কোভিডের চেয়েও ভয়ঙ্কর বিপদ ঘনিয়ে আসছে ২০২৫ সালে!
এরপর আসে হুগলির আরেক শ্বেতকালীর (White Kali Maa) কথা। তিনি আঁটপুরের দেবী সিদ্ধেশ্বরী। স্থানীয়রা এই দেবীকে দেবী রাজবল্লভীর বোন হিসেবে ধরেন। তবে মূর্তিতে কিছু তফাৎ রয়েছে। সাধারণ কালী মূর্তির মতোই দেবীর রূপ। চার হাতের একটিতে খড়গ, একটিতে কাটা মুন্ড, বাকি দুটি হাতে রয়েছে বড়াভয়। এখানেও পদতলে মহাদেব রয়েছেন। দেবীর পাশে থাকে শিয়াল। এখানেও আমিষ ভোগ দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। অন্যদিকে কুলটি লালবাজারের ফলহরিণী কালী মায়ের রং-ও সাদা। সেবায়েতদের দাবি স্বপ্নে মায়ের এই রূপ দেখে সেই মতো মূর্তি বানানো হয়।
এর পর বীরভূমের জয়পুর গ্রামের শ্বেতকালীর (White Kali Maa) কথা বলতে হয়। এখানে মায়ের মূর্তিতে কালী রূপের সাথে মিল দেখা যায়। ডাকের সাজে সজ্জিত থাকে মায়ের আবক্ষ মূর্তি। এখানে পুজোর তিথিতেও রয়েছে বদল। সাধারনত কালীপুজো অমাবস্যায় হলেও এই দেবীর পূজা হয় ভরা পূর্ণিমা তিথিতে। এই একই মূর্তি দেখা যায় চেতলাতে। সেখানেই কালীপুজোর তিথিতে ঘটা করে হয় শ্বেত কালীর পুজো। বাংলার মাটিতে মাত্র এই কটা জায়গাতেই মা শ্বেত কালী রূপে পূজিত হন। প্রতিটি পুজোর সাথেই জড়িয়ে ঐশ্বরিক ইতিহাস যা আজও বহন করে চলে ভক্তরা।