Ganges Course Change: ক্রমাগত বদলাচ্ছে গঙ্গার গতিপথ, চিন্তায় বন্দর কর্তারা। একটু একটু করে গতিপথ বদলাচ্ছে কলকাতার গঙ্গা (Ganga Course Change)। আর সেই কারণে নিমতলা শ্মশানঘাট নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাচ্ছেন বন্দর কর্তারা। শ্মশান ঘাট সংলগ্ন এলাকায় দেখা দিচ্ছে ভাঙনের চিহ্ন। সম্প্রতি এই পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসেছিলেন মেয়র ফিরাদ হাকিম এবং কলকাতা পৌরসভার কমিশনার ধবল জৈন। সাথে উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তারাও।
যাবার আগেই ফিরাদ হাকিম জানিয়ে দেন তিনি কেন নিমতলা শ্মশান ঘাটে যাচ্ছেন। তার সাথে এটাও বলেন যে, তিনি জানেন তিনি গেলেই পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে না। কিন্তু তারপরও তিনি চিন্তিত তাই তিনি নিজে চোখে পরিস্থিতি দেখতে যাচ্ছেন। একেই নিমতলা শ্মশান ঘাটে হওয়া ভাঙ্গন রীতিমতো বিপদজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে। সমস্যায় রয়েছে সংলগ্ন এলাকাগুলি। তার উপর চলছে দুর্গোৎসব। পুজোর কটা দিন কাটিয়ে মা আবারও শ্বশুর বাড়ি ফিরে যাবেন। দুর্গা বিসর্জনের সময় যাতে কোন প্রকার সমস্যা সৃষ্টি না হয় সেই বিষয়গুলি দেখা প্রশাসনের কর্তব্য। কেন্দ্রীয় বন্দর দপ্তর গঙ্গার এই গতিপথ পরিবর্তন (Ganges Course Change) নিয়ে ঠিক কতটা সাহায্য করতে পারছে, তা জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
তবে শুধু নিমতলা শ্মশানঘাট নয়, সমস্যায় রয়েছে আরও একটি গঙ্গা ঘাট। ভাঙনের শিকার হচ্ছে রতন বাবু ঘাটও। মূলত কলকাতার গঙ্গা তার গতিপথ পরিবর্তন (Ganges Course Change) করেছে। যার কারণে হাওড়ার দিকে বেশি পরিমাণে পলি জমছে এবং উল্টোদিকে গঙ্গা নিজস্ব পথ ধরে একেবারে অন্য পথে এগিয়ে চলেছে। পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত আরো বিপদজনক হয়ে পড়ছে। কলকাতা থেকে ফলতা পর্যন্ত গঙ্গার এই গতিপথ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পরিদর্শনে যাবার আগেই একটি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে মেয়র ফিরাদ হাকিম জানিয়েছেন কলকাতা বন্দরের সাথে যৌথ উদ্যোগে কাজ করতে চাইছে কলকাতা পৌরসভা। বন্দর কর্তারা যেভাবে বলবে সেই মতই সুরক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নিমতলা মহাশ্মশান বাঙ্গালীদের কাছে শুধুমাত্র একটি দাহ্য স্থান নয়। এটি অনেক স্মৃতি, অনেক ঐতিহ্য বহন করে চলেছে দিনের পর দিন ধরে। বহু বিশিষ্ট মানুষের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে এই স্থানে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ কাজও হয়েছিল এখানেই। এছাড়াও বিধানচন্দ্র রায়, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, ক্ষিতিমোহন সেন প্রভূত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের শেষ কাজ হয়েছিল নিমতলা মহাশ্মশানে। নিমতলা মহাশ্মশান শুধুমাত্র শ্মশান নয়, বাঙালির আবেগ, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি জড়িয়ে রয়েছে এর সাথে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই ভাঙ্গনের আশঙ্কায় চিন্তিত কলকাতা বাসি।
নিয়ম অনুযায়ী, নিমতলা মহাশ্মশান সহ কলকাতার প্রত্যেকটি গঙ্গা ঘাটের দায়িত্ব রয়েছে কলকাতা বন্দর দপ্তরের হাতে। কিন্তু তারপরও বিপদের দিনে অবশ্যই পাশে এসে দাঁড়াবে কলকাতা পৌরসভাও। এমনটাই জানিয়েছেন মেয়র ফিরাদ হাকিম। তাই তারা কেন্দ্রের সাথে হাত মিলিয়ে কেন্দ্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে চাইছে। তার মতে সুরক্ষা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিশেষজ্ঞদের মতামত মেনে চলাই শ্রেয়। আপাতত দুর্গা বিসর্জন নিয়ে চিন্তিত মেয়র। তবে তিনি কলকাতাবাসীকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, কলকাতার যে ১৬টি ঘাটে দুর্গা বিসর্জন হয় সেই ঘাটগুলিকে সুরক্ষিত করা সম্ভব হয়েছে। কলকাতা পৌরসভার কমিশনার ধবল জৈন স্বয়ং সেই ঘাটগুলি পরিদর্শন করে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গঙ্গার গতিপথ বদলের (Ganges Course Change) ফলে হওয়া ভাঙনের কারণে এই অনুষ্ঠানে যাতে বাধা না পরে সেদিকে খেয়াল রাখছে কলকাতা পৌরসভা।