Dakat Kali Bari: গাছ দিয়ে ঘেরা অদ্ভুতুড়ে পরিবেশ। কাছেই বয়ে চলেছে নদী। এরই মধ্যে পাঁচিল ঘেরা জমিতে একচুড়ো মন্দিরে অবস্থান মায়ের। কালীপুজোর আগে মন্দির পরিচর্যায় লেগে পড়েছে কাছের গ্রামের লোকজন। সামনেই কালীপুজো (Dakat Kali Bari)। সেদিনই ধুমধাম করে সেজে উঠবে হুগলির ডাকাতকালী। পুজোর দিনে হুগলির এই বাঘটি জয়পুর গ্রামের ডাকাতকালি মন্দিরে উবছে পড়বে ভক্তদের ভিড়।
শোনা যায় এলাকার কুখ্যাত রঘু ডাকাত নদীতে স্নানে নেমে ডুব দিয়ে কালী মূর্তি খুঁজে পান। এই ঘটনার পর কেটেছে ৫০০ বছর। নদী তীরের অঞ্চল জুড়ে তখন মৃতদেহের সৎকার করা হতো। সেখানেই শুরু হয় মায়ের পুজো (Dakat Kali Bari)। প্রথমে এই পুজো শুরু করেন বুধো ও রঘু ডাকাত মিলে তবে পরে সময়ের সাথে লোকমুখে রঘু ডাকাতের পুজো নামেই ছড়িয়ে পড়ে। এখানে মা সিদ্ধেশ্বরী রূপে পূজিতা। তবে রঘু ডাকাত দেবীর পুজো দিয়ে এসেছেন সর্বমঙ্গলা নামে!
আরো পড়ুন: আসছে ধনতেরাস! জানেন কি ধনতেরাসে কি কি কেনা শুভ লক্ষণ?
বিপ্রদাসের “মনসামঙ্গল” কাব্যেও এই রঘু ডাকাতের কালীবাড়ির কথা রয়েছে। জানা যায় ডাকাতেরা নরবলি দিয়ে পোড়া ল্যাটা মাছের ভোগ নিবেদন করে ডাকাতি করতে যেতেন। এবং লুটকৃত সম্পদ বিলিয়ে দিতেন গরিবদের মধ্যে। রঘু ডাকাত এবং সাধকও ছিলেন। শোনা যায় পূর্ব বঙ্গের রামশরণ নামের এক বণিক যাত্রা পথে দেবীর পূজা দেন (Dakat Kali Bari) সেই জন্য হাতের নাগালে পেয়েও সম্পদ লুঠ করেনি রঘু। একবার মাতৃ সাধক রামপ্রসাদও এর খপ্পরে পড়েন। পরে তাকে বলি দেওয়ার জন্য ধরে এনে ডাকাত দল। এরপর রামপ্রসাদ শেষ ইচ্ছে স্বরূপ মাকে গান শোনানোর আবেদন জানান। এরপর গান শুনতে শুনতে রঘু ডাকাত দেখেন হাঁড়ি কাঠে মায়ের মুখ। এই ঘটনায় জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় রঘু ডাকাতের। বন্ধ হয় নরবলি। তবে মা এখনও পোড়া ল্যাটা মাছের ভোগ গ্রহণ করেন।
এরপর ১৯৯৮ সালের ভয়াবহ এক ডাকাতির ফলে ভেঙে যায় পুরানো মায়ের মূর্তি। পরে নতুন মূর্তি স্থাপন হয়। এখনও ওই মূর্তিতেই দেবী পূজিত হন। বর্তমান মন্দির সেবাইত জানান কালীপুজোর দিনে সারাদিন পুজো হলেও রাত এগারোটার পর শুরু হয় মূল পুজো। মায়ের ভোগে পোড়া ল্যাটা মাছের সাথে দেওয়া হয় খিচুড়ি, পায়েস, পছরকম ভাজা ইত্যাদি। নরবলি বন্ধ হয়েছে কয়েকশো বছর আগে তবে এখনও চল রয়েছে ছাগল বলীর প্রথা। কালীপুজোর (Dakat Kali Bari) রাতে মশাল জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলি এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।