Mars: সৌরজগতের গ্রহগুলির মধ্যে বিশেষ একটি গ্রহ হল মঙ্গল গ্রহ। যা দূরত্ব অনুসারে সূর্য থেকে চতুর্থ দূরবর্তী গ্রহ। রোমান পুরাণের যুদ্ধদেবতা মার্সের নামানুসারে এই গ্রহের নামকরণ করা হয়। অন্যদিকে আবার লাল গ্রহ হিসেবেও অভিহিত এই মঙ্গল গ্রহ। যে গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজতে নানান গবেষণা করছেন বিজ্ঞানী মহল। এবার সেই প্রাণের সন্ধানেই আশার আলো দেখালো রোবট রোভার। তার আবিষ্কার নিয়ে হইচই বিজ্ঞানী মহলে। প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধানের প্রমাণ হিসেবে কি আবিষ্কার করলেন রোভার? কিভাবে পাওয়া গেল?
রোবট রোভারের বিশেষত্ব
নাসা তরফে মঙ্গল গ্রহে পাঠানো একটি স্বয়ংক্রিয় যান হল এই রোবট রোভার। যা মঙ্গল গ্রহের তথ্য সংগ্রহ করে পৃথিবীতে পৌঁছায়। নাসা তরফে পাঠানো মঙ্গল গ্রহে অবতরণকারী এবং ভ্রমণকারী প্রথম রোবট রবার হল সোজার্নার রোভার। যা ১৯৯৭ সালের ৬ই জুলাই মঙ্গল গ্রহের (Mars) পৃষ্ঠে অবতরণ করে। তবে সাম্প্রতিক নাসার যে রোবট রোভার প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধানে নয়া আবিষ্কার করেছে তা হলো কিউরিওসিটি রোভার।
মঙ্গলে (Mars) নাসার রোভার কি আবিষ্কার করলেন?
মঙ্গল গ্রহে পাঠানো নাসার ৬ চাকা বিশিষ্ট কিউরিওসিটি রোভার প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধানে জৈব যৌগ আবিষ্কার করেছে। যে আবিষ্কারে আশার আলো দেখছেন নাসা বিজ্ঞানীরা। নাসা বিজ্ঞানীদের মতে, এই জৈব যৌগই হয়তো মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কিভাবে সন্ধান মিলল এই জৈব যৌগের?
নাসা বিজ্ঞানীদের তথ্য অনুযায়ী কিউরিসিটি রোভার লাল গ্রহের ইয়েলোফায়েন বেই অঞ্চলের প্রাচীন একটি সম্ভাব্য জলাশয়ের তলদেশ থেকে এক শিলা সংগ্রহ করেছে। আর সেই শিলা গবেষণা করার সময়ই শিলার নমুনায় উঠে আসে এই জৈব যৌগগুলি। যা ৩.৭ বিলিয়ন বছরের পুরনো বলে জানাচ্ছেন নাসা বিজ্ঞানীরা। উল্লেখ্য ফ্রান্সের গায়ানকোর্ট অ্যাটমসফিয়ারস অ্যান্ড স্পেস অবজারভেশনস ল্যাবরেটরিতে গবেষণা করার জন্য এই শিলা পাঠানো হয়। আর সেখানেই উঠে আসে এই জৈব যৌগ। যা জীবনের উপস্থিতির সম্ভাবনা প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন: দেশের টেকনো কোম্পানিগুলোকে তৈরি করতে বলা হল মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম
আর কি কি হদিশ মিলেছে মঙ্গলে প্রাণ সন্ধানে?
লাল গ্রহের বুকে জীবনের উপস্থিতি সন্ধান করতে গিয়ে রোভার খোঁজ পেয়েছে ডেকেন অর্থাৎ অ্যালকেন হাইড্রোকার্বনের। প্রায় ১১টি কার্বন পরমাণুযুক্ত হাইড্রোকার্বনের হদিশ পেয়েছে রোভার। যা জলে অদ্রাব্য। ফ্যাটি এসিডের খণ্ড হচ্ছে এইসব অ্যালকেনগুলি। যা পৃথিবীতে জীবন সৃষ্টির অন্যতম উপাদান বলে দাবি করছে বিজ্ঞানীরা। তাহলে কি সত্যিই প্রাণের সন্ধান মিলল মঙ্গল (Mars) গ্রহে?
রোভারের বিশেষ আবিষ্কারে কী মত নাসা বিজ্ঞানীদের?
নাসা বিজ্ঞানীদের মতে, রোভারের আবিষ্কৃত যৌগগুলি জীব বিজ্ঞান বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় তৈরি হতে পারে। এছাড়াও এই লাল গ্রহ যদি দীর্ঘ শৃঙ্খলযুক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডের সন্ধান পাওয়া যায় তা হলে তা কোষঝিল্লি ক্ষয়ের অবশিষ্টাংশ হতে পারে। তবে রোভারের আবিষ্কৃত এই যৌগ বহু বছরের পুরনো। শুধু তাই না, এই বিশেষ আবিস্কার প্রমান করে একসময় লাল গ্রহের (Mars) ওই নির্দিষ্ট অঞ্চলের পরিবেশ উষ্ণ ও আর্দ্র ছিল। যা প্রাণ সৃষ্টির প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদান ধারণ করত। ফলস্বরূপ মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধানের সরাসরি প্রমাণ পায়নি নাসা বিজ্ঞানীরা। তবে রোভারের আবিষ্কৃত এই যৌগ এখনো পর্যন্ত প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধানের সম্ভাবনাময় প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যা রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে বিজ্ঞানী মহলে।