এই বছরই চালু হতে পারে দ্বিতীয় ফারাক্কা সেতু। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় জাতীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গডকরি লোকসভার অধিবেশনে এই নিয়ে ঘোষণা করেছেন। তবে সেতু নির্মাণের সময়সীমা বেড়ে যাওয়ায় কারণে সেতুর খরচের অংক অনেক অংশ বেড়ে গিয়েছে। আগে ফারাক্কার দ্বিতীয় সেতু নির্মাণে ৫২১ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছিল কিন্তু পরে বলা হয় সেতু নির্মাণে ৬২২.০৪ কোটি টাকা খরচ হবে।
যখন ফারাক্কা সেতু চালু হয়েছিল তখন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ছিল দুই লেনের। যানবাহন চলাচল তখন এত ছিল না। ২০১৮ সালের ২০শে ডিসেম্বর, ৫৪৬৮ মিটার লম্বা এই দ্বিতীয় ফারাক্কা সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল। ২০২১ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। ফারাক্কার বর্তমান যে সেতুটি রয়েছে সেটি সাধারণত দুই লেনের। সেতুর দুদিকেই চার লেনের সড়ক রয়েছে। ফলে যানজট তৈরি হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এই সেতু নির্মাণ হলে উত্তরবঙ্গের সাথে যোগাযোগ সহজ হয়ে যাবে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের একটি সংস্থা সেতু নির্মাণের দায়িত্ব রয়েছে চীনা সংস্থার সহযোগী হিসেবে।
তবে কবে সম্পূর্ণ হবে এই দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের কাজ, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা-কল্পনা চলছিল। কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ৩১শে জুলাইয়ের মধ্যে ফারাক্কার এই দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হবে। এই ঘোষণার পর সারা মুর্শিদাবাদ জুড়ে যেন স্বস্তি ফিরেছে। ফারাক্কার বর্তমান দুই লেনের সেতু ফারাক্কা ব্যারেজের গঙ্গার জলের রিজার্ভার ও যান চলাচলের সেতু হিসাবে কাজ করছে। তবে অত্যাধিক যান চলাচলের দরুন লকগেটগুলি যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনই ক্ষতি হচ্ছে সেতুটিরও। দ্বিতীয় ফারাক্কা সেতু চালু হলে এটি হবে জলভাগের উপরে নির্মিত রাজ্যের দীর্ঘতম সেতু।
আরও পড়ুন: প্রথম দিনেই খননকার্য বন্ধ, দেউচা-পঁচামির বিক্ষুব্ধ আদিবাসীরা
নির্মাণকারী সংস্থাকে দ্বিতীয় ফারাক্কা সেতু নির্মাণের জন্য তিন বছর সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে মাঝে অতিমারি এবং কিছু দুর্ঘটনার জন্য সেতু নির্মাণকার্য কিছুদিন বন্ধ থাকে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ফরাক্কার ডাউনস্ট্রিমের ৫০০ মিটার দূরে গঙ্গার উপর চার লেনের নতুন সেতু তৈরির ছাড়পত্র দেয়। চার লেনের এই সেতুটির অ্যাপ্রোচ রোড-সহ দৈর্ঘ্য হবে ৫.৪৬৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে মূল সেতুর অংশ ২.৫৮ কিমি। বাকি অংশ দু’ধারের সংযোগ সড়ক। এই সেতুটিতে মোট ৮৪ টি স্তম্ভ রয়েছে।
ফারাক্কার প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হক বলেন, “চার লেনের এই নতুন সেতু যানজটের দুর্ভোগ থেকে মানুষকে মুক্তি দেবে। ফরাক্কা বাঁধের নিরাপত্তাও অনেকটাই সুরক্ষিত হবে। ৩১শে জুলাই সেতুর কাজ শেষ হলে তা খুশির খবর সকলের কাছেই।”