জীবনে সফলতা পেতে গেলে দরকার সঠিক পরিশ্রম এবং জীবনের সঠিক দিকনির্দেশ। কঠিন বাস্তবের সম্মুখীন না হলে কখনোই সফলতা আসে না জীবনে। যদি মনোযোগ দিয়ে পরিশ্রম করা যায় এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কোন কাজ করা যায় তাহলে অবশ্যই সমস্ত ইচ্ছাপূরণ হয়। জীবনের যেকোনো কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া তখন খুব সহজ হয়ে দাঁড়াবে। ভারতের সবথেকে কঠিনতম পরীক্ষা হল ইউপিএসসি। এই পরীক্ষাতেই সফলতা অর্জন করেছে শ্বেতা।
দেশের এই কঠিন পরীক্ষাতে বহু লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ভিড় হয় কিন্তু সেখান থেকে সফলতা অর্জন করা মুখের কথা নয়। অদম্য ইচ্ছে থাকলেই তবেই পূরণ হয়, নিজের চেষ্টা এবং পরিশ্রমের দ্বারাই আজ তিনি হয়েছেন আইএএস শ্বেতা ভারতী। তিনি একজন সফল আইএএস অফিসার এবং সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে চাকরি সামলে কোচিং ছাড়াই তিনি এই কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ইউপিএসসির কঠিন প্রাচীর ভেঙে আইএএস হওয়া যায় এটা প্রমাণ করে দিয়েছেন শ্বেতা। সকলে বলে প্রতিদিন যদি ১০-১২ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করা যায় তবেই সাফল্য আসবে। যদিও গতানুগতিক এই ধারণাকে সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছেন শ্বেতা। ৯ ঘণ্টা চাকরি করেও নিজে পড়াশোনা করেছেন, প্রস্তুতি নিয়েছেন। কিভাবে এই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেন তিনি?
আইএএস শ্বেতা ভারতী হলেন বিহারের বাসিন্দা, ২০২১ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সফল আইএএস অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। বিহারের নালন্দা জেলার রাজগির বাজারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা শ্বেতার। এখানেই তিনি সম্পূর্ণ করেছেন তার প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনা। যদিও তিনি ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন সরকারি চাকরি পাওয়ার। কিন্তু যেহেতু তিনি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত তাই এই স্বপ্ন প্রায় অধরা থেকে গেছিল। শ্বেতা চাকরি করে নিজের পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব সামলে ছিলেন। তবে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি দিতে গাফিলতি করেননি তিনি।
আরও পড়ুন: দেশের নতুন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ হিসাবে নিযুক্ত হলেন হরি কুমার
প্রায় ৯ ঘণ্টা টানা ডিউটি করতে হতো তাকে। শ্বেতা কিন্তু অফিস থেকে ফিরে সন্ধে থেকে রাত অবধি পড়াশুনা চালিয়ে যেতেন। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন চাকরি করে আবার পড়াশোনা করে চাকরির প্রস্তুতি নেওয়া সত্যিই সহজ নয়। প্রস্তুতির এই সময়টা নিজেকে একেবারে দূরে রেখেছিলেন সমাজমাধ্যম এবং অনলাইন কমিউনিটি থেকে। পড়াশোনায় যাতে কোনরকম ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্য সমস্তরকম চেষ্টা করেছেন তিনি। একটা সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করাই বন্ধ করে দেন তিনি।
২০২০ সালে বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশনেও ৬৫ র্যাঙ্ক অর্জন করে উত্তীর্ণ হন শ্বেতা। এরপরে ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম অফিসারের পদে চাকরি পান শ্বেতা। বিপিএসসি পাশ করার পরে থেমে থাকেননি, তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষাতেও সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন তার অনেক দিনের। ২০২১ সালে অবশেষে ইউপিএসসি উত্তীর্ণ হন তিনি, দেশের মধ্যে ৩৫৬ র্যাঙ্ক অর্জন করেন।