Disabilities: বিকলাঙ্গতাকে থোড়াই তোয়াক্কা, বিদেশে ৫০ লক্ষের চাকরি প্রত্যাখ্যান কৃতি ছাত্রের

Disabilities: ছোট থেকেই সঙ্গী হুইলচেয়ার। হাত-পা বিকলাঙ্গ হলেও মুখ চালাতে পারদর্শী বাংলার তরুণ। মেদিনীপুরের খড়গপুর এলাকার বাসিন্দা তুহিন দে! জীবনের পরীক্ষায় যোগ দেন মুখের ভরসায় অর্থাৎ মুখে করেই পেন ধরে দিয়েছেন পরীক্ষা। মুখে ধরেই টাইপ করেন কম্পিউটার। পড়াশুনো করে জ্ঞান অর্জনের নেশায় ছেড়েছেন বিদেশী সংস্থার মোটা টাকার চাকরিও। এখন লক্ষ্য খড়গপুর থেকে M.Tech এবং Phd সম্পন্ন করা। গত ৩রা ডিসেম্বর এই কৃতি ছাত্রের হাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনের হাত থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে একাডেমিক এক্সেলেন্সি এন্ড ক্রিয়েটিভ ওয়ার্কস সম্মান।

খড়গপুর মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা তুহিন দে। ছোট থেকেই অচল দুই হাত ও দুই পা। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনোই তাঁর অদম্য ইচ্ছে শক্তিকে দমাতে পারেনি। প্রতিবন্ধী (Disabilities) বলে আলাদা কোনো সাহায্য চাননা তিনি। খড়গপুর আইআইটি ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন ২০১৭ সালে। এরপর রাজস্থানের কোটা থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে B.Tech করেছেন তিনি।

প্রতিবন্ধী (Disabilities) বলে পরীক্ষার সময়েও নেননি কোনো অতিরিক্ত সাহায্য। মুখে পেন এবং পেন্সিল নিয়ে লিখতে কোনরকম সমস্যা হয়নি তাঁর। তুহিন জানান তিনি মুখ দিয়েই লেখা-লিখির কাজ করেন তাতে কোনো রকম সমস্যা হয়না তাঁর। পরীক্ষায় অতিরিক্ত সময়েরও প্রয়োজন হয়না। তবে পরীক্ষার কাগজ সরে গেলে বা পাতা ওল্টাতে সাহায্য নেন তিনি।

আরো পড়ুন: পড়ুয়াদের বছরে ৫০০০০ টাকার স্কলারশিপ দিচ্ছে টাটা গ্রুপ

আমেরিকার একটি ব্যাঙ্ক এবং একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে এসেছিল মোটা মাইনের কাজের সুযোগ। বছরে ৫০ লক্ষ টাকার হাতছানি তুহিনকে তাঁর জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্য থেকে সরাতে পারেনি। লক্ষ্য অনেকদূর। তাই প্রস্তুতি নিচ্ছেন খড়গপুর আইআইটি থেকে M.Tech করার প্রবেশিকা পরীক্ষার।

তুহিনের বাবা সমীরণ দে পেশায় ব্যবসায়ী। মা সুজাতা দে গৃহবধূ। মা-বাবা দুজনেই চান ছেলে আরও পড়াশুনো করুক। তুহিনের মা জানান ছেলেকে খাবার খাইয়ে দিতে হয়। পড়াশোনার সময় বইয়ের পাতাও উল্টে দিতে হয়। লেখার সময় পেন-পেন্সিল রেখে দিলে তুহিন মুখ দিয়েই তুলে নিতে পারে। নিজের চেষ্টায় সব কিছু করছে এই কৃতি ছাত্র। এই প্রসঙ্গে তুহিনের বাবা জানান ছেলের চিকিৎসা করতে বহু জায়গায় ঘুরেছেন। লাভ পাননি। তবে তুহিনও যে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে (Disabilities) বড় করে দেখেনি সেটাও জানান তিনি। বরাবরই এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে অবিচল রয়েছে বাংলার বিশেষ ভাবে সক্ষম এই তরুণ তুহিন দে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *