Summer Vacation: প্রতিবছর তীব্র গরমের জন্য বিভিন্ন স্কুলগুলোতে দীর্ঘ ছুটি দিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। শিক্ষকেরা আশঙ্কা করছে যে, চৈত্রের তীব্র দহনে ফের স্কুলগুলিতে নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই হয়তো গরমের ছুটি পড়বে। শিক্ষকমহলে বেশ চর্চার বিষয় হয়েছে যে, গত কয়েক বছরের রীতি মেনে চলতি বছরেও হয়তো মুখ্যমন্ত্রী নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ঘোষণা করে দেবে গরমের ছুটি। শিক্ষকদের একাংশ আবার দাবি করেছে যে টানা গরমের ছুটি না দিয়ে স্কুল হোক সকালবেলা। অনেকেই আবার প্রশ্ন করেছে যে, গ্রীষ্মপ্রধান রাজ্যে কী ভাবে মাত্র ১১ দিনের গরমের ছুটি দেয় শিক্ষা দফতর?
ছুটি নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত
শিক্ষা দপ্তরের এক সরকারি কর্তা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে তীব্র গরমের কারণে গরমের ছুটি দীর্ঘ করা হবে কিনা সে বিষয়ে সরকার এখনো পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এখনো পর্যন্ত সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গরমের ছুটি (Summer Vacation) পড়তে অনেক দেরি। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী চলতি বছরে গরমের ছুটি পড়ার কথা ১২ই মে আর স্কুল খোলার কথা ২৩শে মে। অর্থাৎ মাত্র ১১ দিনের গরমের ছুটি দিয়েছে শিক্ষা দফতর।
দীর্ঘ করা হয়েছিল ছুটির মেয়াদ (Summer Vacation)
২০২৪ সালে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গরমের ছুটি দেওয়ার কথা ছিল ৯ই মে থেকে ২০শে মে । কিন্তু গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহের কারণে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন বৃদ্ধি করা হবে এই ছুটির মেয়াদ। ২১ই এপ্রিলই গরমের ছুটি পড়ে যায়। ২রা জুন পর্যন্ত গরমের ছুটি দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ টানা দু মাস ছিল গরমের ছুটি। শিক্ষকদের অধিকাংশই বলেছেন গরমের ছুটির মেয়াদ এতটা বৃদ্ধি করলে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করতে অনেক সমস্যা হয়।
পরিকল্পনা নেওয়া উচিত আগে থেকেই
‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, এই নিয়ম চলে আসছে বিগত কয়েক বছর ধরে। সরকার প্রথমে ১০ কিংবা ১১ দিনের ছুটি (Summer Vacation) ধার্য করলেও পরবর্তীকালে পরিস্থিতির চাপে তা বেড়ে হয় প্রায় দেড় মাস। গরম প্রতিবছরই পড়বে তাই পরিকল্পনা নেওয়া উচিত অনেক আগে থেকেই। তেমন মনে হলে স্কুল করতে হবে সকালবেলা।
আরও পড়ুন: এআই নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের, কবে থেকে শুরু?
স্কুল হোক সকালে
দীর্ঘমেয়াদী গরমের ছুটির পরিবর্তে বহু শিক্ষক দাবি করেছে সকালবেলা স্কুল করার জন্য। এরপরে পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে কোনরকম সমস্যা দেখা দেবে না। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, গ্রীষ্মপ্রধান রাজ্যে কখনোই গরমের ছুটি ১১ দিন হতে পারে না। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে তা সত্যিই হাস্যকর। প্রয়োজনে পুজোর এক মাসের ছুটি কমিয়ে গরমের ছুটি (Summer Vacation) বাড়ানো হোক। লক্ষ্মী পুজো থেকে কালীপুজো পর্যন্ত স্কুল খুলে রাখার কথা বলেছে শিক্ষকেরা। মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ করে ছুটি ঘোষণা করে দিলে সমস্যায় পড়তে হয় শিক্ষকদের।
কি বলছে রাজ্যের শিক্ষকেরা?
শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন যে, তীব্র গরমের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যদি হঠাৎ করে ছুটি ঘোষণা করে দেন তাহলে ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠনে এর প্রভাব পড়বে। গত কয়েক বছর ধরেই এই নিয়ম চলে আসছে। শিক্ষার্থীরা যেটুকু বিদ্যা অর্জন করছে তাই দীর্ঘ ছুটির ফলে ভুলে যাচ্ছে। অল্পশিক্ষিত পরিবার বা প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ারা স্কুল নির্ভর পড়াশোনা করে। দীর্ঘ ছুটির কারণে তারা পিছিয়ে পড়ছে অনেকটা। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, কখনোই টানা গরম থাকে না। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হতেও দেখা যায়। দেড়-দু’মাস টানা ছুটি কাম্য নয়। এরফলে সরাসরি ক্ষতি হয় পড়াশোনার। শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গরমের ছুটির সময়ে মিড-ডে মিলও বন্ধ থাকে। অনেক পড়ুয়াদের কাছে এটি গুরুতর সমস্যা। শিক্ষকদের একাংশ আবার প্রশ্ন করেছে যে, মিড-ডে মিলের খরচ কমাতেই কি টানা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়?