Melbourne Test: আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় সংস্করণের লীগ পর্যায়ের খেলা প্রায় শেষের মুখে। তবে এখনো পর্যন্ত দুই ফাইনালিস্ট দল চূড়ান্ত হয়নি। মূলত আর তিনটি সিরিজের ফলাফলের উপরেই নির্ভর করছে যে, কোন দুই দল ফাইনাল খেলবে। তার মধ্যে একটি সিরিজ হলো বর্ডার গাভাস্কার ট্রফি। পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজের প্রথম তিনটি ম্যাচ ইতিমধ্যে খেলা হয়ে গিয়েছে। সেখানে এক ড্র সহ ১-১ অবস্থানে সিরিজ সমতায় রয়েছে। বাকি দুই ম্যাচের প্রথমটি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মেলবোর্নে বক্সিং ডে-তে। এই দুই টেস্টের ফলাফল অস্ট্রেলিয়ার কাছে ডু অর ডাই না হলেও ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে হলে দুটি ম্যাচই জিততে হবে ভারতকে।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া একটি ম্যাচ হারলে বা দুটোই ড্র করলেও পরের সিরিজে শ্রীলঙ্কা এর সাথে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয় তুলে নিলে সরাসরি ফাইনাল খেলার সুযোগ পেয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে অন্য সিরিজে সাউথ আফ্রিকা তাদের ঘরের মাঠে হতে যাওয়া সিরিজে পাকিস্তানকে ১-০ ব্যবধানে হারালেই অস্ট্রেলিয়ার সাথে ফাইনালে চলে যাবে। তাই এমন এক মরণ বাঁচন ম্যাচে (Melbourne Test) খেলতে নামার আগে ভারতীয় দল চাপের মধ্যে থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু না, খবর যা শোনা যাচ্ছে তাতে, এই ম্যাচে ভারতের পক্ষে জয় প্রায় নিশ্চিত। অবাক করা বিষয়? অস্ট্রেলিয়ার মত বিপক্ষের সাথে খেলতে নামার আগেই জয়? হাস্যকর?
কিন্তু না, পরিস্থিতি যেরকম তৈরি হয়েছে, তাতে বিষয়টি মোটেই হাস্যকর নয়। বরং এটিই পরা বাস্তব। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে ঘটনাক্রম যেমন, তাতে করে মেলবোর্নের চতুর্থ টেস্টে (Melbourne Test) ভারতের কাছে অস্ট্রেলিয়ার দুরমুশ হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। কারণ হিসাবে উঠে এসেছে ৪টি মূল কারণ। নিচে সেগুলি নিয়েই আলোচনা করা হলো।
১. ট্রাভিস হেড: নামটা তার ট্রাভিস হেড হলেও ভারতের কাছে তিনি ‘ট্রাভেল এন্ড হেডেক’ নামে পরিচিত। এ হেন ভয়ংকর ট্র্যাভিস হেড তৃতীয় টেস্টের শেষের শেষের দিকে এসে কুঁচকির পেশিতে চোট পান। ম্যাচ শেষে প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচের পুরস্কার নিতে গিয়েও হেড সে কথা নিজে মুখে স্বীকার করেছেন। যদিও শেষ দুই টেস্টের দলে অস্ট্রেলিয়ার টিম ম্যানেজমেন্ট হেডকে দলে রেখেছে। তবুও ১০০ শতাংশ ম্যাচ ফিট হয়ে খেলতে নামা তার পক্ষে বেশ খানিকটা কষ্টসাধ্য হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
২. জস হ্যাজেলউড: ট্রাভিস হেডের মত পুরো ভারতীয় দলের কাছে নাইট মেয়ার না হলেও হ্যাজেলউড বিরাট কোহলির কাছে বর্তমানে আতংকের আরেক নাম। আপাতত পরিসংখ্যান তো সে কথাই বলছে। প্যাট কামিংস, মিচেল স্টার্ক ও হ্যাজেলউডকে নিয়ে তৈরি পেস অ্যাটাক যে কোন দলের জন্য হুমকি স্বরূপ। কিন্তু পায়ের পেশিতে চোট পাওয়ার দরুন শেষ দুই টেস্ট তথা পুরো সিরিজ থেকেই ছিটকে গিয়েছেন জস হ্যাজেলউড। ফলে মেলবোর্ন টেস্টে (Melbourne Test) ভারতের মাথা ব্যথার কারণ খানিকটা কমলো।
আরো পড়ুন: আগের তুলনায় আরও ধনী ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, কোথায় গিয়ে দাঁড়ালো তহবিলের পরিমাণ
৩. ভারতীয় পেসারদের ফর্ম: দ্বিতীয় তথা পিঙ্ক টেস্ট এবং তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে যথেষ্ট বিবর্ণ দেখিয়েছে ভারতীয় পেসারদের। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন বুমরাহ। তবে তৃতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার শেষ ইনিংসে যথেষ্ট পরিপক্কতা প্রদর্শন করেছে ভারতীয় পেসাররা। মাত্র ৮৯ রানে সাত উইকেট ফেলে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে যথেষ্ট চাপের মধ্যে ফেলেছিল। প্রথম ইনিংসের বড় লিডের কারণে সেটা বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি। ভারতীয় পেস বোলিং ইউনিট তাই একই রকম ফর্ম যদি মেলবোর্নে (Melbourne Test) ধরে রাখতে পারে সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া ব্যাটসম্যানদের রান তুলতে যথেষ্ট কসরত করতে হবে।
৪. মেলবোর্নে ভারতের রেকর্ড: ভারত দীর্ঘ ১৩ বছর মেলবোর্নে অপরাজিত। বিদেশের অন্য যেকোনো মাঠের তুলনায় মেলবোর্নে ভারতীয় দল যথেষ্ট ভালো ক্রিকেট খেলে থাকে। ২০১৪-১৫ এর বর্ডার গাভাস্কার ট্রফিতে মেলবোর্ন টেস্ট ড্র করেছিল ভারত। তারপর পর পর দুইটি ট্যুরে অর্থাৎ ২০১৮-১৯ এবং ২০২০-২১ বর্ডার গাভাস্কার ট্রফিতে এখানে জয় পেয়েছে ভারত। তাই এবারের আরো উদ্দীপ্ত ভারতীয় দল মেলবোর্নে যে আরো ভালো ক্রিকেট উপহার দেবে তা বলাই বাহুল্য।