Everest Base Camp: বয়স একটা সংখ্যা মাত্র। কোনো কর্মেই বয়স বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। ক্ষমতা, ইচ্ছা শক্তি থাকলেই বয়সকে পিছনে ফেলে মুহূর্তেই অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। তেমনি এক বিরাট স্বপ্ন সফল করলেন ভারতীয় মহিলা। ৫৯ বছর বয়সে ইচ্ছা শক্তির জোরে পৌঁছে গেলেন এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে। পরনে কাসাভু শাড়ি পড়ে সেই স্থান থেকে পতাকা ওড়ালেন ওই মহিলা। কিভাবে পৌঁছালেন তিনি? এভারেস্টে তার যাত্রাপথ কেমন ছিল? ছবি প্রকাশ্যে আসতেই মন্তব্যের ঝড় কমেন্ট বক্সে।
এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে পৌঁছানো ৫৯ বছর বয়সী ওই মহিলা হলেন কান্নুরের থালিপ্পারাম্বার বাসিন্দা। তার নাম বাসন্তী চেরুভিত্তিল। প্রথম থেকেই তার স্বপ্ন ট্রেকিং করা। এর আগেও তিনি থাইল্যান্ডে একক অভিযান করেছিলেন। তবে এবার তার স্বপ্ন ছিল এভারেস্ট বেস ক্যাম্প (Everest Base Camp) ট্রেকিং করা। সেই স্বপ্ন সফলের জন্য তিনি ৪ মাস ধরে নিজের মতো প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ট্রেকিং বুট পড়ে দিনে প্রায় ৩ ঘন্টা হাঁটার অভ্যাস করেছিলেন। যাত্রাপথে যোগাযোগের জন্য তিনি শিখে নিয়েছিলেন হিন্দি ভাষা। পাশাপাশি ইউটিউব দেখে শিখেছিলেন ট্রেকিংয়ের প্রাথমিক কৌশলগুলিও। আর তারপরেই তিনি শুরু করেছিলেন এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের মাটি স্পর্শ করার অভিযান।
খবর অনুযায়ী তার এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের (Everest Base Camp) অভিযানে প্রথমেই সংকটজনক আবহাওয়ার কারণে বাতিল হয় লুকলার ফ্লাইট। ফলে অন্যদিকে এক জার্মান দম্পতির সাহায্যে নেপালের সুরকে থেকে তিনি বিকল্প পথে যাত্রা করেন। গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি নেপালের সুরকে থেকে অভিযান শুরু হয় বাসন্তী দেবীর। শাড়ি পড়ে যাত্রা করেন তিনি। অভিযান পথে মুখোমুখি হয়েছেন বহু ট্রেকারদের সাথে। তিরুবনন্তপুরম থেকে আগত এক বাবা-ছেলে জুটিও ছিলেন সেই ট্রেকারদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: সাদা বরফের চাদরে ঢাকা রাস্তা ঘাট, রাজস্থান না কাশ্মীর এক ঝলকে দেখে বোঝা মুশকিল
তবে বাসন্তী দেবীর অভিযান বেশ কঠিন ছিল। খাড়া, সরু পথ, গভীর খাত পূর্ণ প্রভৃতি কঠিনতম পথ দিয়ে ট্রেকিং করতে হয়েছে তাকে। অভিযান চলাকালীন সময়ে মাঝেমধ্যে কাঁপুনি, ক্লান্তির সম্মুখীন হতেন তিনি। তবে কোনো কঠিন পরিস্থিতিতেই তিনি হার মেনে নেননি। প্রায় ছয় থেকে সাত ঘন্টা প্রতিদিন হাঁটতেন তিনি। মাঝেমধ্যে ক্লান্তি দূর করার জন্য ঘন ঘন বিরতি নিতেন। বাসন্তী দেবীর কথায়, তার বেশি সময়ের প্রয়োজনে লাঠি ব্যবহার করে তিনি ধীরে ধীরে হাঁটতেন। মাঝেমধ্যে ক্লান্তি দূর করার জন্য বিরতি নিয়ে ৫ বার শ্বাস নিতেন।
এইভাবেই কঠিন যাত্রাপথের মাধ্যমে বয়সকে হার মানিয়ে তিনি পৌঁছে যান এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের (Everest Base Camp) দক্ষিণে। অভিযান সফল হতেই সেই স্থান থেকে পতাকা ওড়ান তিনি। যা ক্যামেরা বন্দী হয়ে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। যা সকল নেটবাসীর মন জয় করে নিয়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়, বাসন্তী দেবীর পরবর্তী স্বপ্ন রয়েছে চীনের প্রাচীর অভিযান। উল্লেখ্য বিষয় অনেক কষ্ট করেই তিনি এই স্বপ্ন সফল করেছেন। দর্জি ব্যবসা করে খরচ জুগিয়েছেন এই অভিযানের। পাশাপাশি মায়ের এই এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের ট্রেকিংয়ে আর্থিক সহায়তা করেছে দুই ছেলে ভিনীথ এবং বিবেক। এই মুহূর্তই বর্তমানে ভাইরাল নেটদুনিয়া জুড়ে। যা আবারো প্রমাণ করে বয়স কোনো কিছুর অন্তরায় হতে পারে না। আত্মশিক্ষা, মনের জোর থাকলেই সবকিছু সম্ভব হয়।