Sealdah Station: কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন, যেখানে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ ট্রেন ধরার জন্য ভিড় জমান। সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে অফিস যাত্রী, ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে পর্যটক, সকলেরই পরিচিত এই স্টেশনটি। দেশের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহত্তম স্টেশনগুলোর মধ্যে শিয়ালদহের স্থান অন্যতম। কিন্তু সম্প্রতি এই ঐতিহাসিক স্টেশনটির (Sealdah Station) নাম বদলানোর দাবিতে শহরের রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। বিজেপির তরফে দাবি উঠেছে, শিয়ালদহ স্টেশনের নাম বদলে করা হোক শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে।
বুধবার কলকাতায় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এসে একগুচ্ছ নতুন পরিষেবা চালু করেন শিয়ালদহ স্টেশন থেকে। ট্রেনের কোচ বাড়ানো, প্ল্যাটফর্মের সম্প্রসারণ, এবং আজিমগঞ্জ-কাসিমবাজার ট্রেন চালুর ঘোষণা সহ নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা তিনি তুলে ধরেন। মন্ত্রী জানান, শিয়ালদহ স্টেশন (Sealdah Station) প্রতিদিনের যাত্রী সংখ্যা তিন লক্ষ পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন সময়ে বঙ্গ বিজেপি তাদের নতুন দাবি নিয়ে হাজির হয়।
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য সরাসরি রেলমন্ত্রীকে স্টেশনের নাম পরিবর্তনের কথা জানান। তার দাবি, শিয়ালদহ স্টেশনটি ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বহু উদ্বাস্তু মানুষ আশ্রয় পেয়েছিলেন। রক্তাক্ত দেশভাগের সময়ে শিয়ালদহ স্টেশন হয়ে উঠেছিল আশ্রয়স্থল। সেই সময় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যেভাবে মানুষকে সাহায্য করেছিলেন, তার স্বীকৃতিস্বরূপ স্টেশনের নাম তার নামে করার দাবি জানানো হয়।
এই দাবি নিয়ে শিয়ালদহ স্টেশনের ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অবদান নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শিয়ালদহ স্টেশন ১৮৬২ সালে প্রথম চালু হয়, এবং ১৮৬৯ সালে বর্তমান স্টেশন ভবনটি তৈরি করা হয়। এর পর থেকেই এই স্টেশন কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে কি শিয়ালদহের ঐতিহাসিক মূল্য এবং প্রভাব পরিবর্তিত হবে?
রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই নাম পরিবর্তনের ইস্যুটি নিয়ে আলোচনা চলছে। বিজেপি যেখানে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামকরণকে সমর্থন করছে, অন্যদিকে বিরোধী পক্ষ এই পরিবর্তনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব অবশ্য এই বিষয়ে সরাসরি কোনো প্রতিশ্রুতি না দিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
শিয়ালদহ স্টেশন (Sealdah Station) শুধুমাত্র একটি যাত্রীবাহী কেন্দ্র নয়, এটি ইতিহাসের সাক্ষী। শতাব্দী পেরিয়ে আজও কলকাতার জনজীবনের সাথে এই স্টেশনটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তাই এর নাম বদলানো হলে কী প্রতিক্রিয়া হবে, সেটি এখন দেখার বিষয়।