Earthquake: প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে এক অন্যতম ভয়ঙ্কর বিপর্যয় হল ভূমিকম্প। যা হঠাৎ করেই অনুভূতি হয় বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়। মূলত ভূ-অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট অংশে পাতের সঞ্চালনে একটি পাতের উপর আরেকটি পাত উঠে গেলে সেই অংশ কিছুক্ষণের জন্য কেঁপে ওঠে। যা তছনছ করে দেয় ভূ-পৃষ্ঠের সেই স্থানকে। সম্প্রতি তেমনি শিহরিত ভূমিকম্পের সম্মুখীন হল মায়ানমারবাসী। একবার নয়, জোড়া ভূমিকম্পে ধ্বংসলীলায় পরিণত মায়ানমারের বিভিন্ন জায়গা। স্তব্ধ জনজীবন। পাওয়া যাচ্ছে না চিকিৎসা ব্যবস্থা। বর্তমান পরিস্থিতি কেমন? কোথায় কোথায় কি ক্ষয়ক্ষতি হলো?
মায়ানমারের ভূমিকম্প (Earthquake)
এই প্রথম নয়, এর আগেও ২০১৬ সালে অনুভূত হওয়া মায়ানমারের ভূমিকম্প ভয়াবহ আঘাত এনেছিল দেশবাসীর মধ্যে। সেই সময় বার্মার প্রাচীন শহর বাগান কেঁপে উঠেছিল। যার রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৬.৪। হতাহতের সংখ্যা ছিল ৩ জন। ভেঙে পড়েছিল পর্যটন কেন্দ্রের চূড়া, মন্দিরের দেওয়াল সহ কিছু বাড়ি। তবে শুক্রবার মায়ানমারে অনুভূত হওয়ার জোড়া ভুমিকম্প বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে বার্মা দেশে।
উৎপত্তিস্থল কোথায়?
শুক্রবারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মায়ানমারে ঘটে যাওয়া জোড়া ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হল সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভারতীয় সময় অনুযায়ী প্রথম ভূমিকম্পন (Earthquake) অনুভূত হয় বেলা ১১ঃ৫০ মিনিটে। যার তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৭.৭ মাত্রা। প্রায় কয়েক মিনিট ধরে চলে এই কম্পন। ঠিক তার কিছুক্ষণ পরেই আবারো জোড়া ভূমিকম্পে ক্ষেপে ওঠে বার্মা দেশ। যার তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৬.৪ মাত্রা। শুধু মায়ানমার নয়, এই কম্পন এতটাই তীব্র ছিল যে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্কককেও নাড়িয়ে দিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের নানান জায়গায়।
আরও পড়ুন: মহাসমুদ্রের নীচে রাস্তা হওয়া আদৌ কি সম্ভব? এমনই এক প্রমাণ মিলেছে
ক্ষয়ক্ষতির পরিস্থিতি
খবর অনুযায়ী, শুক্রবারের জোড়া ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে সেই দৃশ্য। যেখানে দেখা যাচ্ছে একের পর এক বহুতল ভবন চূর্ণবিচূর্ণ হয়েছে মায়ানমারের রাজধানী নেপিদো সহ মান্দালয় শহরে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে থাইল্যান্ড, ব্যাঙ্কক জুড়ে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তাঘাট। ধসে পড়েছে ইংরেজ আমলের সেতু। আতঙ্কে পথে নেমেছে থাইল্যান্ড, মায়ানমারের মানুষজন।
কোন সেতু ধ্বসে পড়েছে?
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মায়ানমারে ব্রিটিশ আমলে তৈরি আভা সেতুটি প্রবল ভূমিকম্পে (Earthquake) ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যা ৯১ বছরের পুরানো। মায়ানমারের ইরাবতী নদীর উপর নির্মিত এই সেতুর ধসে সাগাইঅং এবং মান্দালয় অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ত্রুটি তৈরি করেছে। পাওয়া যাচ্ছে না সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা।
হতাহতের সংখ্যা কত? বর্তমান পরিস্থিতি কেমন?
মায়ানমারের এই ভয়াবহ ভূমিকম্প (Earthquake) সম্পর্কে সঠিক নির্দিষ্ট কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করেছে মায়ানমার ও থাইল্যান্ড সরকার। এখনো পর্যন্ত এএফপি তরফে জানানো হয়েছে, প্রাণানীর সংখ্যা জানা যায়নি। তবে নিখোঁজ হয়েছেন ৪৫ জন। অন্যদিকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলগুলিতে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা পৌঁছানো বড় কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকার তরফে দ্রুত উদ্ধারকার্য এবং চিকিৎসা সহায়তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে যে হারে এই ভূমিকম্পন অনুভূতি হয়েছে তাতে করে প্রবল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা।