বছরের শুরুতেই দেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগের জন্য ইউজিসির পক্ষ থেকে প্রকাশ করা খসড়া রাজ্য মানবে কিনা এই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। এই সবের মধ্যে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তৈরি হয়েছে আট জন সদস্যের একটি দল। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধ্যাপকদের নিয়েই এই আট জন সদস্যের দল গঠন করা হয়। জানা যাচ্ছে আগামী ৩১শে জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত তথ্য জমা দেবে এই বিশেষ কমিটি।
সূত্রের খবর আগামী ৫ই ফেব্রুয়ারি তারিখের মধ্যে রাজ্যকে ইউজিসি প্রদত্ত নিয়োগ সংক্রান্ত খসড়া নিয়ে মতামত জানানোর জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। এর সেই জন্যই দ্রুত সিদ্ধান্তে আসতে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিনিধি দল। এই দলের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন উচ্চশিক্ষা পর্ষদের কাউন্সিলের পরামর্শদাতা দেবনারায়ন বন্দোপাধ্যায়। এই কমিটির আহ্বায়ক পদে রয়েছেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের আইনবিষয়ক আধিকারিক শিলাদিত্য চক্রবর্তী। এছাড়াও একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা রয়েছেন এই কমিটিতে।
সম্প্রতি ইউজিসি উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক এবং উপাচার্য নিয়োগ করার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে চেয়ে ঘোষণা করেছে। এতে রাজ্যপালের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। যার ফলে পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরল সহ একাধিক রাজ্য এই নতুন নিয়মের বিরোধিতা করেছে। রাজ্যগুলির অভিযোগ যে রাজ্যের হাত থেকে ক্ষমতা কেঁড়ে নিয়ে শিক্ষার মান কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এদিকে খসড়ায় বলা হয়েছে এবার থেকে প্রার্থীদের নেট, সেট এবং পিএইচডি ডিগ্রির উপর বেশি জোর দেওয়া হবে। অর্থাৎ স্নাতকোত্তরে অন্য বিষয় নিয়ে পড়লেও আবেদন করা যাবে বলে জানায় ইউজিসি।
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে রমরমিয়ে চলছিল ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়, তালিকায় কলকাতার প্রতিষ্ঠানও
এছাড়াও উপাচার্য পদে আবেদনের জন্যও বদল আনা হচ্ছিল যোগ্যতায়। ইউজিসির তরফে জানানো হয় দেশের শিক্ষাবিদ ছাড়াও অন্য পেশাদার যেমন শিল্পপতি বা বেসরকারি সংস্থার প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদেরও উপাচার্য পদে আবেদন গ্রহণ করা হবে। তবে এদের নন একাডেমিক পদে আবেদন করতে হবে। এই নতুন খসড়া অদেও রাজ্যগুলি কার্যকর করতে চাইছে কিনা সেই সিদ্ধান্ত জানানোর সময়সীমা দেওয়া হয়েছে আগামী ৫ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এদিকে ইউজিসি প্রদত্ত এই নতুন খসড়া ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। যদিও এই বিষয়ে ইউজিসি যে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান এম জগদেশ কুমার। তিনি জানান শিক্ষার পরিসর দিনে দিনে অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেখানে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিতরাও নজির গড়ছেন। সেই জন্যই নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য উপাচার্য নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের শূন্যস্থান পূরণ করা এবং গবেষণার কাজে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশ্বের দরবারে আলোকপাত করা।