ভারতের রাজনৈতিক জগতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা তিনি। যার পড়াশোনা, দক্ষতা বেশ উচ্চ পর্যায়ের। বর্তমানে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান তিনি। অতীব মেধা থাকা সত্ত্বেও তিনি চাকরি করে আরামদায়কভাবে জীবন কাটাননি। বরং আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন করেন তিনি। সাধারণ মানুষকে সাহায্য করার জন্য তাদের পাশে থাকার জন্য ঘর ছাড়েন তিনি। কে সেই উদার ব্যক্তি? সেই ব্যক্তি হলেন বর্তমান সিপিআইএম কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য বিমান বসু (Biman Basu)। সাম্প্রতিক সেই ব্যক্তিরই ছবি ঘিরে চরম বিতর্ক ওঠে নেটদুনিয়ায়। যা পৌঁছে যায় রাজ্য-রাজনীতি মহলে, আর সেই বিতর্কে নেটিজেনদের জবাব দিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। কি সেই ছবি? সেই ছবির পোস্টেইবা কি জবাব দিলেন তিনি?
গত শুক্রবার রাত্রিবেলা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর (Biman Basu) একটি ছবি। যে ছবিতে সিপিআইএম নেতা বিমান বসুকে একটি ভোজনশালার টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ছবিটা দেখে অনুমান করা যায়, এই ভোজনশালাটি জাতীয় সড়কের ধারেই অবস্থিত। বিমান বাবুকে দেখে মনে হয় হয়তো সেখানেই তিনি তার ভোজন সেড়েছেন। অপরদিকে সেই ছবিতেই প্রদর্শিত হয় ব্যক্তির পিছনের দিকে টেবিলে বসে খাওয়া-দাওয়া করছেন বেশ কয়েকজন অতিথিগণ। আর এই দৃশ্যই নেটদুনিয়ায় পোস্ট হতে শুরু হয় চরম বিতর্ক।
বিমান বাবুর রেস্তোরাঁর এই ছবি নেটদুনিয়ায় শেয়ার করেছেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। আর সেই ছবির শিরোনামে লিখেছেন যে উৎসবে না ফিরে শুধু রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার কথা। বিমান বাবুর এই ছবি ঘিরে চলছে আরো নানান বিতর্ক। আর এই বিতর্কের আবহেই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের বিরোধিতা করে জবাব দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসেরই নেতা কুণাল ঘোষ। বিমান বাবুর এই ছবি নিয়ে সৌজন্য দেখান তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন এই ছবি সম্পর্কিত একটি লেখা।
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বিমান বাবুর এই ছবি নিয়ে বিরোধিতা করে বলেন যে শুক্রবার রাত থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিমান বাবুর ছবি ও পোস্ট ঘিরে চলছে চরম বিতর্ক। তবে তিনি দেখা মাত্রই বিমান বাবুর সেই ছবি এবং মন্তব্যের পোস্টগুলিতে আপত্তি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর এই আপত্তি শুনে অনেকেই ফেসবুক থেকে তৎক্ষণাৎ ডিলিট করেছেন বিমান বাবুর সেই পোস্ট। এই সৌজন্যতা দেখে ধন্যবাদও জানিয়েছেন কুনাল ঘোষ। ফলস্বরূপ এখান থেকে স্পষ্ট হয় বিমান বসুর এই ছবি ঘিরে চরম বিতর্ক মানতে নারাজ বিমান সমালোচকরাও।
তবে অপরদিকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বিমান বাবুর সম্পর্কে এই সৌজন্যতা দেখে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। হঠাৎ কুণাল ঘোষের এই পোস্ট ডিলিট করার পরামর্শ কেন? তবে এই প্রশ্নের উত্তরে কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন যে এই ছবিটি কবে কার তা তাঁর জানা নেই। তবে তাঁর মনে হয় এটা কোনো দূরপাল্লার যাত্রার মাঝে রাস্তার ধারেল একটি দোকান। কারণ দূরযাত্রার মাঝপথে কোথাও বিশ্রাম নেওয়াটা স্বাভাবিক। হয়তো তিনি এটাই করছিলেন। কারণ বিমান বাবু (Biman Basu) এখন কোথাও খেতে যেতে পারেন না, এটা অসম্ভব ব্যাপার।
অন্যদিকে সূত্র মারফতে জানা গিয়েছে, শনিবার প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং সীতারাম ইয়েচুরির স্মরণসভা ছিল। আর সেই উপলক্ষে বহরমপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন বিমান বসু। সড়কপথেই তিনি গিয়েছিলেন। এই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় কৃষ্ণনগরের ধারে রাস্তার দোকানে চা খান তিনি। তারপর আবার যাত্রা শুরু করেন। তবে কুণাল ঘোষের দাবী বিমান বাবুর এই ছবি পোস্ট করে আবার ডিলিট করে ভদ্রতা দেখিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা।