Choddo Shaak: কালীপূজার সাথে জড়িয়ে চোদ্দ শাক খবর রীতি, কেনো খাওয়া হয় এই চোদ্দ শাক?

Choddo Shaak: আসছে কালীপুজো! বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে এর সাথেই জড়িয়ে রয়েছে চোদ্দ শাক খাওয়া এবং চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম। কালীপুজোর আগের দিন পালন হয় ভুত চতুর্দশী। আর ওইদিনই চোদ্দ শাক খবর নিয়ম রয়েছে। যার ইতিহাস শুনলে বুঝবেন বাংলার নিয়ম রীতিতেও রয়েছে বিজ্ঞানের ছোঁয়া। কালীপুজোর আগে চতুর্দশী তিথি অনুযায়ী এই নিয়ম পালন করা হয়ে থাকে। এই চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানোর পিছনের কারন হিসেবে বলা যায় বর্ষার পর গ্রাম বাংলার সন্ধ্যার পর বিভিন্ন পোকা-মাকড়, সাপ-খোপের উপদ্রব হয়। এই সময় প্রদীপ জ্বালিয়ে এইসব বিপদ থেকে রক্ষা পেতে প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা চালু হয়।

চড়ক সংহিতা, সুশ্রুত সংহিতা, অস্টঙ্গ হৃদয়, ভাবপ্রকাশ সহ আরো একাধিক পৌরাণিক বইতেও চোদ্দ শাক (Choddo Shaak) খবর বিষয়ে বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। এই রীতি মূলত স্বাস্থ্য সম্মত। চোদ্দ শাক অর্থাৎ চোদ্দ রকম শাক একত্রে রান্না করে খাওয়া। কালীপুজোর একদিন আগেই পালন হয় চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানো ও চোদ্দ শাক খবর উৎসব। এই দিনটিকে বাংলা শাস্ত্রে ভুত চতুর্দশীও বলা হয়।

কালীপুজোর সাথে সরাসরি চোদ্দ শাক (Choddo Shaak) পাওয়ার সূত্র না পাওয়া গেলেও সমাজবিজ্ঞানীরা দাবি করেন এর মাধ্যমে প্রাচীন বাংলায় সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বাংলার গুরুত্বকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলার মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পুষ্টিগুণেও যে জীবন অতিবাহিত হতে পারে মনে করা হয় চোদ্দ শাকের খবর রীতি এর গুরুত্ব বোঝানোর জন্যই হয়েছে। এটি একাধারে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে হওয়া রোগ প্রতিরোধেও বিশেষ ভূমিকা রাখে বলে মনে করা হয়।

আরো পড়ুন: রীতি মেনে দেওয়া হতো নরবলি, হুগলির এই মন্দির ঘিরে রয়েছে বহু ইতিহাস

চোদ্দ শাকের (Choddo Shaak) মধ্যে পালং শাক, সজনে শাক, লাল শাক, মুলো শাক, কলমি, সর্ষে, মেথি শাক, পাট শাক, গিমে শাক, পুঁই শাক, কুমড়ো শাক, নোটে শাক, হিঞ্চে শাক, শুশনি শাক ইত্যাদির মিশ্রণে তৈরি পদ খাওয়ার চল রয়েছে বাংলার ঘরে ঘরে। কালীপুজোর (Kalipuja 2024) সময় আশ্বিন মাসের চতুর্দশী তিথি অনুযায়ী এই নিয়ম পালন হয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরেই।

তবে পুরান মতে বলা হয় বংশের চোদ্দ পুরুষের মঙ্গলার্থে এবং তাদের মৃত্যু পরবর্তী সমস্ত দুঃখ কষ্টের অবসান হয়ে যাতে তারা পুনরায় জন্ম লাভ করতে পারে জাগতিক সমস্ত টান ভুলে যাতে তারা নতুন জীবন পায় তাদের উদ্দেশ্যেই এই চোদ্দ প্রদীপ জ্বালিয়ে অন্ধকারের মাঝে আলোর পথ চিনিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও জানা যায় পূর্ব জীবনের পিছুটান কাটিয়ে উঠে যাতে তাঁরা নতুন জীবন লাভ করেন সেই উদ্দেশ্যেই কালীপুজোর (Kalipuja 2024) আগের দিন ভুত চতুর্দশী উপলক্ষে খাওয়া হয় চোদ্দ শাক (Choddo Shaak) এবং জ্বালানো হয় চোদ্দ প্রদীপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *