Purple Line: নতুন উদ্যোগে কাজ শুরু, জট কাটল পার্পেল লাইনের। মেট্রোর পার্পেল লাইন অর্থাৎ জোকা থেকে বিবাদীবাগ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু করার ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছিল সমস্যা। বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ধর্মতলার বিধান মার্কেট। শেষ পর্যন্ত বিধান মার্কেট বা ময়দান মার্কেটের ৫২৮ জন ব্যবসায়ীকে কার্জন পার্কে পুনর্বাসন দিতে রাজি হয়ে গেল ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিভাগ। এবার হয়তো পার্পেল লাইনের কাজ করতে আর কোন বাধার সম্মুখীন হতে হবে না। এমনটাই মনে করছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। জোকা থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত তৈরি হওয়া এই পার্পেল লাইনের মোট ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে ৫ কিলোমিটার পথ থাকছে ভুগর্ভস্থ। তার মধ্যে ৩ কিলোমিটার পথ গেছে ময়দান এলাকার নিচ দিয়ে।
এই এলাকাটি যেহেতু ভারতীয় সেনার আওতায় রয়েছে তাই ভারতীয় সেনার অনুমতি ছাড়া বিধান মার্কেটের পুনর্বাসন সম্ভব ছিল না। আর পুনর্বাসন না হলে এই মেট্রো রেলপথ তৈরি করা হয়তো সম্ভব হতো না। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে এসপ্ল্যানেড স্টেশনকে তিনটি আলাদা লাইনের সাথে যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। এই তিনটি লাইন হল কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বরের ব্লু লাইন, সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো এবং জোকা থেকে এসপ্ল্যানেড পারপেল লাইন (Purple Line)।
আপাতত ঠিক যে অংশটাতে ময়দান মার্কেট রয়েছে সেখানেই তৈরি হতে চলেছে এসপ্ল্যানেডের পার্পেল লাইনের মেট্রো স্টেশনটি। আর তাই জন্যেই শুরু হয়েছিল সমস্যা। পার্পেল লাইনের কাজ এসপ্ল্যানেড অব্দি নিয়ে যাওয়া আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে অনেকদিন ধরেই সমস্যা চলছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিনটি আলাদা মেট্রো রেলপথের সংযোগ স্থল হিসেবে ব্যবহার করা হবে এসপ্ল্যানেড মেট্রো রেলস্টেশনটিকে। কিন্তু এই রেলপথটি অর্থাৎ মেট্রোর পার্পেল লাইন (Purple Line) তৈরি করতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ধর্মতলার ময়দান মার্কেট বা বিধান মার্কেট। প্রথমে বাজারটি ভেঙ্গে ফেলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে সায় দেয়নি ব্যবসায়ীরা।
খুব স্বাভাবিকভাবেই বাজার ভেঙে ফেলার কথা শুনতেই সেখানকার ৫২৮ জন ব্যবসায়ী প্রতিবাদ করে। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাজারটি পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হবে না তার পরিবর্তে বাজারটির পুনর্বাসন দেওয়া হবে। অর্থাৎ কার্জন পার্কে একটি বহুতল আবাসনে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে সমগ্র বাজারটিকে। ৫২৮ জন ব্যবসায়ীকেই পুনর্বাসন দেওয়া হবে ওই আবাসনে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে বাধা দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী।
আরো পড়ুন: তপসিয়ায় তৈরি হবে নতুন ব্রিজ, উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয় বিধান মার্কেটের কোন প্রকার বৈধতা নেই। তাই সেই মার্কেটের ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য সেনাবাহিনীর জায়গা ব্যবহার করা যাবে না। এরপর পরিস্থিতি একেবারেই হতাশা জনক হয়ে পড়ে। মেট্রোর পার্পেল লাইনের (Purple Line) কাজ আদৌ শেষ করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে এই সমস্যার কথা পৌছয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে। এরপরই পাওয়া গেছে সমাধান। সরাসরি দিল্লি থেকেই এসেছে নির্দেশ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে কাজের সুবিধার্থে অস্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি করা যেতে পারে।
অর্থাৎ বিধান মার্কেটের সমস্ত ব্যবসায়ীকে সাময়িকভাবে কার্জন পার্কের ওই জায়গায় নিয়ে যাওয়া হলে তাতে কোন প্রকার আপত্তি জানাবে না প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। নানা কারণে ১৪ কিলোমিটারের দীর্ঘ মেট্রো রেলপথের কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছিল না। আপাতত জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত পারপেল লাইনের (Purple Line) পরিষেবা চালু রয়েছে। বাকি অংশের কাজ শেষ হলে বেহালার স্থানীয়দের জন্য কলকাতায় আসা অনেক সহজ হয়ে যাবে। তাই এই লাইনের কাজ কবে শেষ হবে সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছে বহু মানুষ। অনেক বাধা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হস্তক্ষেপে পাওয়া গেছে সমাধান। আশা করা যায় এবার হয়তো মেট্রোর লাইনের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। এখন সবকিছুই শুধু সময়ের অপেক্ষা।