সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টার বেশি ওয়ার্কিং আওয়ার, মারাত্মক কুপ্রভাব ফেলতে পারে স্বাস্থ্যের উপর

৭০-৯০ ঘন্টা ওয়ার্কিং আওয়ার নিয়ে বিতর্কের মধ্যে, শুক্রবার প্রাক-বাজেট অর্থনৈতিক সমীক্ষায় এমন একটি তথ্য উঠৈ এসেছে যেখানে বলা হয়েছে যে, সপ্তাহে ৬০ ঘন্টার বেশি সময় কাজে ব্যয় করা স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে ডেস্কে কাটানো মানসিক সুস্থতার জন্য ক্ষতিকারক এবং যারা প্রতিদিন ১২ ঘন্টা বা তার বেশি সময় ডেস্কে কাটান তাদের মানসিক সুস্থতার ওপল যথেষ্ট কুপ্রভাব পড়ছে। পেগা এফ, নাফ্রাডি বি (২০২১) এবং ‘ডব্লিউএইচও/আইএলও-দের মতানুসারে, যদিও কর্মক্ষেত্রে ব্যয় করা ঘন্টাগুলিকে প্রোডাকটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, পূর্ববর্তী একটি গবেষণায় প্রতি সপ্তাহে ৫৫-৬০ ঘন্টার বেশি সময় কাটালে স্বাস্থ্যের উপর প্রতিকূল প্রভাবের নথিভুক্ত করা হয়েছে।

স্যাপিয়েন ল্যাবস সেন্টার ফর হিউম্যান ব্রেইন অ্যান্ড মাইন্ডের একটি গবেষণার তথ্য উদ্ধৃত করে একটি সার্ভেতে বলা হয়েছে যে, ডেস্কে দীর্ঘ সময় কাজ করার ফলে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। যারা ১২ বা তার বেশি ঘন্টা একটি ডেস্কে কাটান তাদের মানসিক সুস্থতার স্কোর তাদের তুলনায় প্রায় ১০০ পয়েন্ট কম যারা একটি ডেস্কে দুই ঘন্টার কম বা তার সমান সময় কাটান। একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, যদি ভারতের অর্থনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হয়, তাহলে শৈশব এবং যৌবনকালে জীবনযাত্রার পছন্দগুলিতে তাৎক্ষণিক মনোযোগ দিতে হবে।

২০২৪-২৫ সালের ওয়ার্কিং আওয়ার সপ্তাহের সমীক্ষাটি প্রকাশিত হয়েছে, যখন লারসেন অ্যান্ড টুব্রো লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এন সুব্রহ্মণ্যম সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র বিতর্ক শুরু করেছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন যে কর্মীদের ঘরে বসে থাকার চেয়ে রবিবার সহ সপ্তাহে ৯০ ঘন্টা কাজ করা উচিত। যদি কেউ আট ঘন্টার বেশি সময় বাড়িতে কাটায় সেক্ষেত্রে তিনি ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির ৭০ ঘন্টা ওয়ার্কিং আওয়ারের পরামর্শ এবং আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির “স্ত্রী পালিয়ে যাবে” মন্তব্য অনুসরণ করেছিলেন।

আরও পড়ুন: চীন আমেরিকার পর আসতে চলেছে ভারতের নিজস্ব এআই মডেল, জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব

একইভাবে, আইটিসি লিমিটেডের চেয়ারম্যান সঞ্জীব পুরি বলেছেন যে কর্মীদের তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো এবং তাদের কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করার ক্ষমতা প্রদান করা, কত ঘন্টা কাজ করে তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কর্ম-জীবনের ভারসাম্য বিতর্ক চীনেও একই রকমের হইচই সৃষ্টি করেছে, যেখানে তথাকথিত ‘৯৯৬ সংস্কৃতি’ – তিনটি সংখ্যা সপ্তাহে ছয় দিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত একটি শাস্তিমূলক সময়সূচী নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে।

১৯৪৮ ভারতীয় কারখানা আইনের ৫১ ধারা অনুসারে, কোনও কর্মীর সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার বেশি ওয়ার্কিং আওয়ার থাকা উচিত নয়। অর্থনৈতিক সমীক্ষায় একই আইনের আরও একটি ধারা ৬৫(৩)(iv) সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। এই আইন এবং ধারা অনুসারে, কোনও ত্রৈমাসিকে ওভারটাইম ৭৫ ঘন্টার বেশি হওয়া উচিত নয়। কেন্দ্রীয় সরকার তার পুরো বাজেটে তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ প্রদানের দিকে জোড় দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *