মানুষ তার উপার্জিত অর্থের কিছুটা পরিমাণ সরিয়ে রাখে ভবিষ্যতের জন্য। সঞ্চিত অর্থ দিয়েই ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত রাখা যায়। সাধারণত বেশিরভাগ মানুষ তাদের সঞ্চিত অর্থ রাখতে পছন্দ করে ব্যাংক কিংবা এলআইসির বিভিন্ন প্রিমিয়ামে। কিন্তু ব্যাংকের বিভিন্ন শেয়ার অথবা এলআইসিতে টাকা সঞ্চয় করা আদৌ কি নিরাপদ ?
অবশেষে ভারত সরকার নিলো বিরাট বড় সিদ্ধান্ত। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (SEBI) এর নিয়ম মেনে চলতে গেলে নিতে হবে বড় পদক্ষেপ। পাঁচটি পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক এবং এলআইসি সহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে গোটা দেশে। মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে নিজেদের অর্থের জন্য।
সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগে শেয়ার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ তহবিল সংগ্রহ এবং দেশের কোষাগার পূরণের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। এর মধ্যে পাঁচটি পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক এবং ভারতীয় জীবন বীমা কর্পোরেশন এর ছোট শেয়ার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আসলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য হল SEBI-এর শর্ত পূরণ করা। পাবলিকলি তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলিতে কমপক্ষে ২৫% শেয়ার জনসাধারণের হাতে থাকতে হবে।
সরকার কিভাবে সংগ্রহ করবে তহবিল? কেন্দ্রীয় সরকার যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে বিক্রি করতে হবে পাঁচটি পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কের শেয়ার। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ১০,০০০ কোটি টাকা সংগ্রহ হবে। এই কার্যকলাপ সম্পন্ন হবে কোয়ালিফাইড ইনস্টিটিউশনাল প্লেসমেন্ট নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। আপাতত করা হবে স্বল্প পরিমাণে যা আর্থিক বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে শুরু হবে।
আরও পড়ুন: ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া কবে থেকে শুরু? নতুন বিলে কি কি নিয়ম রয়েছে?
এছাড়া শেয়ার বিক্রি অফার ফর সেল রুটের মাধ্যমেও এলআইসি এবং ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করা হবে। আগামী বছরের আগস্টের মধ্যে ২৫% পাবলিক শেয়ারহোল্ডিংয়ের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সহায়তা করবে এই প্রক্রিয়াটি।শেয়ার বিক্রি পরিচালনা করার জন্য, একটি বিশেষ উচ্চ-স্তরের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি কখন, কীভাবে এবং কত শেয়ার বিক্রি করা হবে তা নির্ধারণ করবে। এই বিক্রির মূল কারণ হল SEBI-এর নিয়ম মেনে চলা, যার ফলে সরকারি কোম্পানিগুলির একটি নির্দিষ্ট শতাংশ শেয়ার ব্যক্তিগত হাতে থাকা বাধ্যতামূলক।
কম পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং এর কারণে নিম্নলিখিত ব্যাঙ্কগুলি প্রভাবিত হবে। দেখে নিন একঝলকে নিম্নের তালিকা।
- এলআইসি: সরকার MPS নিয়ম মেনে এলআইসিতে-তে তার শেয়ার কমানোর পরিকল্পনা করছে।
- পাঞ্জাব ও সিন্ধু ব্যাঙ্ক: মাত্র ১.৭৫% পাবলিক হোল্ডিং
- ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক: ৩.৬২% পাবলিক হোল্ডিং
- সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া: পাবলিক হোল্ডিং ৬.৯২%।
- ইউকো ব্যাঙ্ক: পাবলিক হোল্ডিং ৪.৬১%।
- ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র: পাবলিক হোল্ডিং ২০.৪%।
এসবের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসুরেন্সে ১৪.৫৬% এবং জিআইসি আরইতে ১৭.৬% অংশীদারিত্ব কমানোর পরিকল্পনা করছে।