হোলি হলো এমন একটি উৎসব যা ভারতের নানাপ্রান্তে নানাভাবে পালন করা হয়। কোথাও দোল উৎসব কোথাও আবার হোলি। হিন্দুদের কাছে এই উৎসবটির মাহাত্ম্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটি সকলেই আনন্দের সঙ্গে কাটাতে পছন্দ করেন। তবে ভারতের আধ্যাত্মিক নগরী বেনারসে এই হোলির দিন কিভাবে পালন করা হয় অনেকেই সঠিক জানেন না। মাশান হোলি বিখ্যাত বেনারসে। এই হোলি খেলা হয় শ্মশানে, বিশেষত মণিকর্ণিকা ঘাটে। তবে জেনে রাখুন এই হোলির সঙ্গে কিন্তু প্রথাগত হোলির কোনও যোগ নেই। দেশে হোলি পালন করা হবে ১৪ই মার্চ। কিন্তু মাসান হোলি হবে ঠিক তার আগে অর্থাৎ ১১ই মার্চ।
আজকের এই বিশেষ দিনটি বেনারসে ধুমধাম করে পালন করা হয়। তবে এই হোলির সঙ্গে কোনরকম যোগ নেই প্রথাগত হোলির। প্রথাগত রঙ্গোলি বা ফাগুয়া বা ধুলন্ডি বা দোল বা রং-খেলায় ব্যতিক্রমী এই হোলি এক উচ্চ দর্শনের চর্চা করে। কারা খেলে এই হোলি? জানেন কি জীবন ও মৃত্যুকে এক করে দেখা হয় এই বিশেষ দিনে। সাধারণত মাশান হোলি খেলে অঘোরী সন্ন্যাসীরা।
অঘোরীরা বিরাজ করছে সারা ভারতেই। তাদের দেখা যেমন মেলে ভারতের দক্ষিণে তেমনি তারা রয়েছে হিমালয়ে, আবার বেনারসে, নাসিকে, উজ্জয়িনীতেও। কিন্তু অঘোরীদের এই হোলি কিন্তু স্পেশাল বেনারসেই। এই হোলি সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক কোন ধারণা নেই। অনেক শিক্ষিত মানুষও জানেন না মাশান হোলি সম্পর্কে। আজকের প্রতিবেদনটি পড়লে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন সবটাই।
আরও পড়ুন: দোল পূর্ণিমা ও হোলি উৎসবে শুভ সামগ্রী কেনার গুরুত্ব, বাড়বে সৌভাগ্য ও আর্থিক সমৃদ্ধি
মাশান বা মশান শব্দটি এসেছে শ্মশান থেকে। এই হোলিতে ব্যবহার করা হয় না কোনরকম রং, আসলে এটি খেলা হয় মৃতদেহ-পোড়া ছাই দিয়ে। এর একটাই অর্থ, জীবনের চূড়ান্ত সত্য হল মৃত্যু। মাশান হোলির আসল উদ্দেশ্য হলো মৃতদেহের ছাইকে সেই ভাবনার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা এবং হোলি খেলায় মেতে ওঠা।
অঘোরী সন্ন্যাসীরা বিশ্বাস করেন যে, রংভরী একাদশীতে ভগবান শিব তাঁর ভক্তদের সঙ্গে এই হোলি খেলেন। ভগবান শিব এই বিশেষ হোলি খেলেন তাঁর অনুচর ভূতপ্রেতেদের সঙ্গে। এই বিশ্বাসের সঙ্গেই প্রচলিত হয়েছে এই হোলি খেলা। নিজেদের আরাধ্য দেবতার এই হোলিখেলাকে স্মরণীয় রাখতেই অঘোরী বাবারাও শ্মশানের চিতাভস্মে হোলি খেলেন।