হাওড়া বা শিয়ালদহ নয়, তাহলে দক্ষিণের সবথেকে পুরনো রেলওয়ে জংশন কোনটি?

ভারতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হলো রেল মাধ্যম। যে পরিবহনের উপর ভরসা করে প্রতিদিন দূর-দূরান্তে ছুটে চলে সাধারণ মানুষ। এই মাধ্যম হলো খুবই সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক। কম-বেশি প্রায়ই রেলপথে ভ্রমণ করা হয়। কিন্তু জানেন ভারতের দক্ষিণবঙ্গের সবথেকে প্রাচীন রেলওয়ে জংশন কোনটি? কি ভাবছেন হাওড়া বা শিয়ালদহ? আজ্ঞে না, তাহলে কোনটি? জানতে হলে চোখ রাখুন এই প্রতিবেদনে।

ভারতীয় রেলের দক্ষিণবঙ্গের প্রাচীন জংশনের কথা জিজ্ঞাসা করলে অনেকেই উত্তর দেন হাওড়া কিংবা শিয়ালদহ। কিন্তু না, এই স্টেশনগুলি জনমহলে খ্যাত হলেও ভারতের সবচেয়ে পুরনো স্টেশন রয়েছে অন্য জায়গায়। যে রেলওয়ে জংশনের বিশেষভাবে নামডাক না হলেও ভারতীয় রেল পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কি সেই স্টেশনের নাম? কোথায় রয়েছে? তার ইতিহাস কি?

ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে, দেশের দক্ষিণবঙ্গের সবথেকে প্রাচীন রেলওয়ে জংশন রয়েছে পূর্ব বর্ধমানে। যার নাম খানা জংশন। এই রেলওয়ে স্টেশনটি মূলত পূর্ব রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সাথে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যা হাওড়া বিভাগেরই একটি অংশ। রাজ্যের বিভিন্ন অংশ এবং তার বাইরের অংশের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই স্টেশনের ওপর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত ট্রেন এবং যাতায়াত করে হাজার হাজার যাত্রী।

আরও পড়ুন: পরিচারিকা, ডেলিভারি পার্সনদের জন্য ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিমের পরিকল্পনা কেন্দ্রের, কবে থেকে চালু হবে?

কবে, কিভাবে, কোন উদ্দেশ্যে গড়ে তোলা হয়েছিল এই প্রাচীন রেলওয়ে জংশন? ইতিহাস বলছে উনিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে দক্ষিণের এই রেলওয়ে জংশন নির্মিত হয়। তবে এর পিছনে রয়েছে এক অজানায় ইতিহাস। জানা গিয়েছে, তৎকালীন সময়ে দামোদর নদীর নারায়নকুড়ি ঘাট থেকে কলকাতায় কয়লা পরিবহন করত টেগোর অ্যান্ড কোম্পানি। তবে একটা সময় এই পরিবহন পদ্ধতিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়। পথ বন্ধ হয়ে যায়। আর সেই সমস্যা সমাধানে পূর্ব ভারতীয় রেলওয়ে ১৮৫৫ সালে কলকাতা এবং হুগলি থেকে রানীগঞ্জ পর্যন্ত পাটা রেলপথ নির্মাণ করে। যার ফলে কয়লা সরবরাহ সমস্যা দূর হয়। আর তার বেশ কয়েক বছর পর ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব বর্ধমানের এই জংশনকে গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদা দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য বিষয়, পূর্ব বর্ধমান তথা ওই এলাকার স্থানীয়দের গর্বের উৎস এই খানা জংশন। এই রেলওয়ে জংশনটি মোট ৫টি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে নির্মিত। KAN হল স্টেশনের কোড নাম্বার। শুধু তাই না, এই প্রাচীন রেলওয়ে জংশন একটি ঐতিহাসিক স্থান। যা কয়েক যুগ ধরে ভারতীয় রেল ব্যবস্থার পরিবর্তনের সাক্ষী। তবে হাওড়া, শিয়ালদহের মতো নাম ডাক না হওয়ায় এই জংশন সম্পর্কে অনেকেই অজানা। যার ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত বহু ট্রেন, যাত্রী ছুটে চলে। তাহলে জানা হয়ে গেল দেশের দক্ষিণের প্রাচীন রেলওয়ে জংশন কোনটি। যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এটি কাজে লাগতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *